মৌলভীবাজার জেলা

বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের চা-বাগান, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও পর্যটনের স্বর্গভূমি

মৌলভীবাজার জেলা বাংলাদেশের বিখ্যাত চা শিল্প, অপরূপ পাহাড়ি দৃশ্য এবং বহুজাতিক সম্প্রদায়ের সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের জন্য সুপরিচিত। সিলেট বিভাগের অংশ হিসেবে এ জেলা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও পর্যটনের জন্য দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণ।


গঠনের ইতিহাস ও পটভূমি

  • ব্রিটিশ আমলে চা শিল্পের প্রসারের সাথে মৌলভীবাজার অঞ্চলের গুরুত্ব বাড়ে।

  • ১৮৮২ সালে মৌলভীবাজার মহকুমা গঠিত হয়।

  • ১৯৮৪ সালে মৌলভীবাজার জেলা হিসেবে উন্নীত হয়।

  • চা শিল্প, প্রাকৃতিক জলপ্রপাত ও পাহাড়ি জনগোষ্ঠী এখানকার পরিচিতি।


প্রশাসনিক তথ্য

বৈশিষ্ট্য বিবরণ
জেলার নাম মৌলভীবাজার জেলা
গঠনের বছর ১৯৮৪ সাল
জেলা সদর দপ্তর মৌলভীবাজার শহর
উপজেলার সংখ্যা ৭টি উপজেলা
ইউনিয়ন পরিষদ প্রায় ৬৭টি ইউনিয়ন
মোট আয়তন প্রায় ২,৭০৭ বর্গকিলোমিটার
মোট জনসংখ্যা (২০২৫) প্রায় ২২ লক্ষাধিক

ধর্মীয় পরিসংখ্যান (আনুমানিক)

ধর্ম জনসংখ্যার অনুপাত
ইসলাম প্রায় ৭৯%
হিন্দুধর্ম প্রায় ১৮%
অন্যান্য প্রায় ৩%

প্রশাসনিক বিভাগসমূহ

মৌলভীবাজার জেলার অন্তর্গত ৭টি উপজেলা:

  • মৌলভীবাজার সদর উপজেলা
  • রাজনগর উপজেলা
  • কমলগঞ্জ উপজেলা
  • কুলাউড়া উপজেলা
  • শ্রীমঙ্গল উপজেলা
  • জুড়ী উপজেলা
  • বড়লেখা উপজেলা

স্থানীয় সরকার কাঠামো

  • জেলা প্রশাসক (DC) জেলার প্রধান প্রশাসনিক কর্মকর্তা।

  • উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (UNO) উপজেলা পর্যায়ে দায়িত্ব পালন করেন।

  • ইউনিয়ন পরিষদ ও পৌরসভাগুলোতে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা শাসন পরিচালনা করেন।

  • মৌলভীবাজার পৌরসভা ও শ্রীমঙ্গল পৌরসভা স্বাধীনভাবে পরিচালিত।


নেতৃত্ব ও শাসনব্যবস্থা

  • বিভাগীয় কমিশনার: সিলেট বিভাগের শীর্ষ প্রশাসনিক কর্মকর্তা।

  • জেলা প্রশাসক: মৌলভীবাজার জেলার প্রধান নির্বাহী।

  • স্থানীয় পর্যায়ে: উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং পৌর মেয়র।


আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা

  • জেলা পুলিশ সুপার ও থানাসমূহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় দায়িত্বপ্রাপ্ত।

  • প্রতিটি উপজেলায় থানা ও ফায়ার সার্ভিস ইউনিট সক্রিয় রয়েছে।

  • পর্যটন মৌসুমে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।


অর্থনীতি ও শিল্প

  • প্রধান খাত: চা শিল্প, পর্যটন, কৃষি।

  • শ্রীমঙ্গল: বাংলাদেশের “চা রাজধানী”।

  • প্রধান কৃষিপণ্য: চা, কমলা, আনারস, ধান।

  • প্রবাসী আয়: যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশে বসবাসরত মৌলভীবাজারবাসীর রেমিট্যান্স।


শিক্ষা ও প্রতিষ্ঠান

  • শীর্ষ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: মৌলভীবাজার সরকারি কলেজ, শ্রীমঙ্গল সরকারি কলেজ।

  • মাধ্যমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয়: পর্যাপ্ত সংখ্যা।

  • শিক্ষার হার (২০২৪): আনুমানিক ৭৪%


স্বাস্থ্য ব্যবস্থা

  • মৌলভীবাজার সদর হাসপাতাল: প্রধান স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র।

  • প্রতিটি উপজেলায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।

  • বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও আধুনিক চিকিৎসা সেবা বিদ্যমান।


যোগাযোগ ও অবকাঠামো

  • সড়ক: ঢাকা-মৌলভীবাজার-শ্রীমঙ্গল মহাসড়ক।

  • রেল: মৌলভীবাজার ও শ্রীমঙ্গল রেলস্টেশন।

  • সড়ক ও রেল সংযোগের মাধ্যমে ঢাকা ও সিলেটের সাথে সহজ যাতায়াত।


পর্যটন ও দর্শনীয় স্থান

  • প্রাকৃতিক: লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, হাম হাম জলপ্রপাত, মাধবকুণ্ড জলপ্রপাত।

  • ঐতিহাসিক: চা-বাগান এলাকা, বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য।

  • সাংস্কৃতিক: ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সম্প্রদায়ের গ্রাম — খাসিয়া, মণিপুরি সংস্কৃতি।

  • বিশেষ আকর্ষণ: চা গবেষণা ইনস্টিটিউট, সাতরঙা চা।


সংস্কৃতি ও জীবনধারা

  • চা-শ্রমিকদের জীবনধারা ও ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক পরিবেশ।

  • খাদ্য: চা-বাগানের বিশেষ খাবার, পাহাড়ি মাংস রান্না।

  • পোশাক: মণিপুরি ও খাসিয়া ঐতিহ্যবাহী পোশাক।

  • স্থানীয় মেলা ও সাংস্কৃতিক উৎসব: বৈশাখী মেলা, মণিপুরি রাস উৎসব।


সারাংশ

মৌলভীবাজার জেলা বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, চা শিল্প এবং সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের অন্যতম প্রতীক। পর্যটন, কৃষি ও প্রবাসী অর্থনীতির সমন্বয়ে গঠিত মৌলভীবাজার জেলা আজ দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ একটি গন্তব্যস্থল। প্রকৃতি ও মানুষের সহাবস্থানের এক অপূর্ব চিত্র ফুটে উঠেছে এই জেলায়।


নিউজ ও আর্টিকেল

নিচের শিরোনামগুলোতে ক্লিক করে এই অংশ সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ নিবন্ধসমূহ পড়ুন:


আমাদের লক্ষ্য (ওয়েবসাইট ভিশন)

এই ওয়েবসাইটে আমরা তুলে ধরছি বাংলাদেশের প্রতিটি:

  • বিভাগ, জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন ও গ্রাম সংক্রান্ত তথ্য

  • ইতিহাস, জনসংখ্যা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, অর্থনীতি, কৃষি, পরিবেশ

  • পর্যটন স্থান, বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব, স্থানীয় উৎসব ও খাদ্যসংস্কৃতি

  • তথ্যনির্ভর, নির্ভরযোগ্য ও আপডেটেড একটি পূর্ণাঙ্গ জাতীয় তথ্যভাণ্ডার


যোগাযোগ করুন

আপনার এলাকার তথ্য আপডেট বা সংশোধনের জন্য আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করুন
আপনার অংশগ্রহণই আমাদের এই তথ্যভান্ডারকে সমৃদ্ধ করে তুলবে।


ধন্যবাদ!
আপনি এখন বাংলাদেশের প্রতিটি প্রান্ত জানার যাত্রায় আছেন – আমাদের সাথেই থাকুন!