পদ্মা নদীঘেঁষা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও কৃষিপ্রধান জনপদ
দোহার উপজেলা বাংলাদেশের ঢাকা জেলার একটি গুরুত্বপূর্ণ নদীবিধৌত ও কৃষিনির্ভর উপজেলা। পদ্মা নদীর কোলঘেঁষে অবস্থিত এই উপজেলা তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, কৃষি উৎপাদন, এবং নদীভাঙন সংক্রান্ত বাস্তবতার জন্য বিশেষভাবে পরিচিত। দোহার তার লোকজ ঐতিহ্য এবং প্রবাসী আয়ের মাধ্যমেও গুরুত্ব বহন করে।
গঠনের ইতিহাস ও পটভূমি
-
ঐতিহাসিকভাবে দোহার পদ্মা নদীর পাড়বর্তী একটি প্রাচীন বসতিস্থল।
-
ব্রিটিশ শাসনামলে দোহার অঞ্চল বৃহত্তর ঢাকা জেলার অন্তর্ভুক্ত ছিল।
-
১৯৭৪ সালে দোহার থানা প্রতিষ্ঠিত হয়।
-
১৯৮৪ সালে এটি পূর্ণাঙ্গ উপজেলা হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
-
দোহার প্রাচীন কাল থেকেই কৃষি এবং নদী পথের মাধ্যমে ব্যবসা-বাণিজ্যের কেন্দ্র ছিল।
প্রশাসনিক তথ্য
বৈশিষ্ট্য | বিবরণ |
---|---|
উপজেলার নাম | দোহার উপজেলা |
জেলা | ঢাকা জেলা |
গঠনের বছর | থানা: ১৯৭৪, উপজেলা: ১৯৮৪ |
উপজেলা সদর | দোহার বাজার |
ইউনিয়নের সংখ্যা | ১২টি ইউনিয়ন |
গ্রামের সংখ্যা | প্রায় ২২০টি গ্রাম |
মোট আয়তন | প্রায় ১৪৪ বর্গকিলোমিটার |
মোট জনসংখ্যা (২০২৫) | প্রায় ৩ লক্ষাধিক |
ধর্মীয় পরিসংখ্যান (আনুমানিক)
ধর্ম | জনসংখ্যার অনুপাত |
---|---|
ইসলাম | প্রায় ৯০% |
হিন্দুধর্ম | প্রায় ৯% |
অন্যান্য | প্রায় ১% |
প্রশাসনিক বিভাগসমূহ
দোহার উপজেলার অন্তর্গত ১২টি ইউনিয়ন:
-
বিলাসপুর ইউনিয়ন
-
কার্তিকপুর ইউনিয়ন
-
জয়পাড়া ইউনিয়ন
-
মাহমুদপুর ইউনিয়ন
-
নয়াবাড়ী ইউনিয়ন
-
সুতারপাড়া ইউনিয়ন
-
নারিশা ইউনিয়ন
-
রায়পাড়া ইউনিয়ন
-
সিংগাইল ইউনিয়ন
-
মাহমুদপুর পূর্ব ইউনিয়ন
-
মুকসুদপুর ইউনিয়ন
-
কুসুমহাটি ইউনিয়ন
(কিছু নাম স্থানভেদে সামান্য পরিবর্তিত হতে পারে, স্থানীয় তথ্য নিশ্চিত করা যেতে পারে।)
স্থানীয় সরকার কাঠামো
-
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (UNO) ও উপজেলা চেয়ারম্যান প্রশাসনিক নেতৃত্ব প্রদান করেন।
-
প্রতিটি ইউনিয়নে নির্বাচিত চেয়ারম্যান ও মেম্বারগণ দ্বারা পরিচালিত ইউনিয়ন পরিষদ।
-
দোহার উপজেলায় বর্তমানে পৌরসভা গঠিত হয়নি।
নেতৃত্ব ও শাসনব্যবস্থা
-
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা: সরকারি প্রশাসনের প্রতিনিধি।
-
উপজেলা চেয়ারম্যান: নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি।
-
ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও মেম্বারগণ স্থানীয় শাসন পরিচালনা করেন।
আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা
-
দোহার থানা: উপজেলার প্রধান আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কেন্দ্র।
-
ফাঁড়ি, পুলিশ ক্যাম্প ও কমিউনিটি পুলিশিং ইউনিটগুলো সক্রিয়।
-
স্থানীয় ফায়ার সার্ভিস ইউনিট দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় অবদান রাখছে।
অর্থনীতি ও শিল্প
-
প্রধান খাত: কৃষি, বিশেষ করে ধান, পান, সবজি, কলা চাষ।
-
পদ্মা নদীকেন্দ্রিক মৎস্য চাষ ও মাছ ধরা।
-
রেমিট্যান্স: দোহার এলাকার উল্লেখযোগ্য সংখ্যক প্রবাসীর প্রেরিত অর্থ।
-
ক্ষুদ্র ব্যবসা ও হস্তশিল্পের প্রসার ঘটেছে।
শিক্ষা ও প্রতিষ্ঠান
-
মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়: দোহার সরকারি কলেজ, জয়পাড়া পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়।
-
প্রচুর প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসা।
-
কারিগরি শিক্ষা ও বেসরকারি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলো সম্প্রসারিত হচ্ছে।
স্বাস্থ্য ব্যবস্থা
-
দোহার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।
-
ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র।
-
বেসরকারি ক্লিনিক ও ওষুধ বিতরণ কেন্দ্র।
-
সম্প্রতি স্বাস্থ্যখাতে ডিজিটাল রেকর্ডিং ব্যবস্থা চালু হয়েছে।
যোগাযোগ ও অবকাঠামো
-
সড়ক: নবাবগঞ্জ ও ঢাকা শহরের সাথে সরাসরি সড়ক সংযোগ।
-
অভ্যন্তরীণ: রিকশা, ইজিবাইক ও নৌযান।
-
নদীপথ: পদ্মা নদী ব্যবহার করে নৌযোগাযোগ।
পর্যটন ও দর্শনীয় স্থান
-
প্রাকৃতিক সৌন্দর্য: পদ্মা নদীর তীরবর্তী এলাকা।
-
ঐতিহ্যবাহী বাজার ও মেলা।
-
ধর্মীয় স্থানসমূহ: স্থানীয় মসজিদ ও মন্দির।
সংস্কৃতি ও জীবনধারা
-
লোকসংস্কৃতি: গ্রামীণ মেলা, পালাগান, ভাটিয়ালি গান।
-
খাদ্যাভ্যাস: ইলিশ মাছ, পান্তা ভাত, গ্রামীণ খাদ্যপণ্য।
-
প্রবাসী সংস্কৃতি: সৌদি আরব, ইউরোপ ও আমেরিকাগামী রেমিট্যান্স নির্ভর জীবনযাত্রা।
সারাংশ
দোহার উপজেলা পদ্মা নদীর প্রাণঘাতী প্রবাহের ছোঁয়ায় প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও কৃষি উৎপাদনের দিক দিয়ে অনন্য। ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, কৃষি এবং প্রবাসী আয়ের সমন্বয়ে দোহার বাংলাদেশের একটি সম্ভাবনাময় উপজেলা হিসেবে বিকশিত হচ্ছে। নদীভাঙন, জলবায়ু পরিবর্তন এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের সাথে সাথে দোহার আজ নতুন সম্ভাবনার পথে এগিয়ে চলছে।
নিউজ ও আর্টিকেল
নিচের শিরোনামগুলোতে ক্লিক করে এই অংশ সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ নিবন্ধসমূহ পড়ুন:
আমাদের লক্ষ্য (ওয়েবসাইট ভিশন)
এই ওয়েবসাইটে আমরা তুলে ধরছি বাংলাদেশের প্রতিটি:
-
বিভাগ, জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন ও গ্রাম সংক্রান্ত তথ্য
-
ইতিহাস, জনসংখ্যা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, অর্থনীতি, কৃষি, পরিবেশ
-
পর্যটন স্থান, বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব, স্থানীয় উৎসব ও খাদ্যসংস্কৃতি
-
তথ্যনির্ভর, নির্ভরযোগ্য ও আপডেটেড একটি পূর্ণাঙ্গ জাতীয় তথ্যভাণ্ডার
যোগাযোগ করুন
আপনার এলাকার তথ্য আপডেট বা সংশোধনের জন্য আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
আপনার অংশগ্রহণই আমাদের এই তথ্যভান্ডারকে সমৃদ্ধ করে তুলবে।
ধন্যবাদ!
আপনি এখন বাংলাদেশের প্রতিটি প্রান্ত জানার যাত্রায় আছেন – আমাদের সাথেই থাকুন!