পদ্মা-যমুনা বিধৌত বাণিজ্য ও শিল্পনগরী
সিরাজগঞ্জ জেলা বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য, শিল্প ও কৃষিভিত্তিক জেলা। বৃহৎ নদীসমূহের প্রবাহ ও আধুনিক শিল্পের বিকাশের কারণে সিরাজগঞ্জকে উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার এবং অর্থনৈতিক সম্ভাবনার কেন্দ্র বলা হয়।
গঠনের ইতিহাস ও পটভূমি
-
সিরাজগঞ্জের ইতিহাস মুঘল যুগ থেকে শুরু হলেও, ১৮৩৪ সালে এটি একটি মহকুমা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়।
-
১৯৮৪ সালে সিরাজগঞ্জ পূর্ণাঙ্গ জেলা হিসেবে ঘোষিত হয়।
-
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে সিরাজগঞ্জ ছিল গুরুত্বপূর্ণ মুক্তাঞ্চল।
প্রশাসনিক তথ্য
বৈশিষ্ট্য | বিবরণ |
---|---|
জেলার নাম | সিরাজগঞ্জ জেলা |
গঠনের বছর | ১৯৮৪ সাল |
জেলা সদর দপ্তর | সিরাজগঞ্জ শহর |
উপজেলার সংখ্যা | ৯টি উপজেলা |
ইউনিয়ন পরিষদ | প্রায় ৮২টি ইউনিয়ন |
মোট আয়তন | প্রায় ২,৪৯৯ বর্গকিলোমিটার |
মোট জনসংখ্যা (২০২৫) | প্রায় ৩৬ লক্ষাধিক |
ধর্মীয় পরিসংখ্যান (আনুমানিক)
ধর্ম | জনসংখ্যার অনুপাত |
---|---|
ইসলাম | প্রায় ৯৩% |
হিন্দুধর্ম | প্রায় ৬% |
অন্যান্য | প্রায় ১% |
প্রশাসনিক বিভাগসমূহ
সিরাজগঞ্জ জেলার অন্তর্গত ৯টি উপজেলা:
-
সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা
-
কামারখন্দ উপজেলা
-
উল্লাপাড়া উপজেলা
-
শাহজাদপুর উপজেলা
-
বেলকুচি উপজেলা
-
চৌহালী উপজেলা
-
কাজিপুর উপজেলা
-
রায়গঞ্জ উপজেলা
-
তাড়াশ উপজেলা
স্থানীয় সরকার কাঠামো
-
জেলা প্রশাসক (DC) জেলার প্রধান প্রশাসনিক কর্মকর্তা।
-
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (UNO) উপজেলা পর্যায়ে দায়িত্ব পালন করেন।
-
ইউনিয়ন পরিষদ ও পৌরসভাগুলো জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে পরিচালিত হয়।
-
সিরাজগঞ্জ পৌরসভা এবং অন্যান্য পৌরসভাগুলো স্থানীয় শহর প্রশাসন পরিচালনা করে।
নেতৃত্ব ও শাসনব্যবস্থা
-
বিভাগীয় কমিশনারের অধীনে জেলা প্রশাসক (DC) কার্যক্রম তত্ত্বাবধান করেন।
-
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা (UNO) উপজেলা প্রশাসনের নেতৃত্বে থাকেন।
আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা
-
জেলা পুলিশ প্রশাসন আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখার দায়িত্বে।
-
প্রতিটি উপজেলায় থানা, ফায়ার সার্ভিস ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ইউনিট সক্রিয়।
-
শাহজাদপুর এবং বেলকুচি শিল্পাঞ্চলে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে।
অর্থনীতি ও শিল্প
-
কৃষি: ধান, পাট, সবজি, মাছ চাষ।
-
বেলকুচি ও শাহজাদপুর: দেশের খ্যাতনামা তাঁত শিল্প কেন্দ্র।
-
সিরাজগঞ্জ ইপিজেড (EPZ): রপ্তানিমুখী শিল্প বিকাশের কেন্দ্র।
-
নদীবন্দর: বাণিজ্যিক নৌ-পরিবহনের অন্যতম কেন্দ্র।
শিক্ষা ও প্রতিষ্ঠান
-
সরকারি গুরুদাস মহাবিদ্যালয়, সিরাজগঞ্জ
-
উল্লাপাড়া সরকারি কলেজ
-
শাহজাদপুর সরকারি কলেজ
-
মাধ্যমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য
-
শিক্ষার হার (২০২৪): আনুমানিক ৭৭%
স্বাস্থ্য ব্যবস্থা
-
সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সদর হাসপাতাল
-
প্রতিটি উপজেলায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।
-
বেসরকারি হাসপাতাল, আধুনিক ক্লিনিক এবং বিশেষায়িত স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র বৃদ্ধি পাচ্ছে।
যোগাযোগ ও অবকাঠামো
-
সড়ক: ঢাকা-সিরাজগঞ্জ মহাসড়ক (এন-৫), সিরাজগঞ্জ-রায়গঞ্জ সড়ক।
-
রেল: সিরাজগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনের মাধ্যমে রাজধানী ঢাকা ও দেশের অন্যান্য অংশের সাথে সংযোগ।
-
সেতু: বঙ্গবন্ধু সেতু বাংলাদেশের বৃহত্তম সড়ক ও রেল সংযোগের অন্যতম কেন্দ্র।
-
নদীপথ: পদ্মা ও যমুনা নদীর মাধ্যমে সীমানা সংযোগ।
পর্যটন ও দর্শনীয় স্থান
-
ঐতিহাসিক: বঙ্গবন্ধু সেতু, এনায়েতপুরের খানকা শরীফ।
-
প্রাকৃতিক: যমুনার চরাঞ্চল ও নদী পাড়ের সৌন্দর্য।
-
ধর্মীয়: শাহজাদপুরে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতি বিজড়িত কাচারিবাড়ি।
সংস্কৃতি ও জীবনধারা
-
খাদ্য: নদীমাতৃক অঞ্চল হওয়ায় মাছভিত্তিক খাদ্য সমৃদ্ধ।
-
তাঁত শিল্প: বেলকুচি ও শাহজাদপুরের তাঁত শিল্প বিশ্ববিখ্যাত।
-
সংস্কৃতি: রবীন্দ্র সাহিত্য, লোকসংগীত, পালাগান ও মেলা উৎসব।
সারাংশ
সিরাজগঞ্জ জেলা শিল্প, কৃষি, বাণিজ্য এবং সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের এক অনন্য সমন্বয়। বঙ্গবন্ধু সেতুর সংযোগে দেশের গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক প্রবেশদ্বার হিসেবে সিরাজগঞ্জ বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে অগ্রগতির একটি প্রধান কেন্দ্র হয়ে উঠেছে।
নিউজ ও আর্টিকেল
নিচের শিরোনামগুলোতে ক্লিক করে এই অংশ সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ নিবন্ধসমূহ পড়ুন:
আমাদের লক্ষ্য (ওয়েবসাইট ভিশন)
এই ওয়েবসাইটে আমরা তুলে ধরছি বাংলাদেশের প্রতিটি:
-
বিভাগ, জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন ও গ্রাম সংক্রান্ত তথ্য
-
ইতিহাস, জনসংখ্যা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, অর্থনীতি, কৃষি, পরিবেশ
-
পর্যটন স্থান, বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব, স্থানীয় উৎসব ও খাদ্যসংস্কৃতি
-
তথ্যনির্ভর, নির্ভরযোগ্য ও আপডেটেড একটি পূর্ণাঙ্গ জাতীয় তথ্যভাণ্ডার
যোগাযোগ করুন
আপনার এলাকার তথ্য আপডেট বা সংশোধনের জন্য আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
আপনার অংশগ্রহণই আমাদের এই তথ্যভান্ডারকে সমৃদ্ধ করে তুলবে।
ধন্যবাদ!
আপনি এখন বাংলাদেশের প্রতিটি প্রান্ত জানার যাত্রায় আছেন – আমাদের সাথেই থাকুন!