শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা ও সমাজ উন্নয়নের সমন্বয়ে গঠিত একটি অগ্রসর জনপদ
মির্জাপুর উপজেলা টাঙ্গাইল জেলার দক্ষিণাঞ্চলে অবস্থিত একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা, যা শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা এবং আধুনিক সমাজ উন্নয়নের জন্য দেশজুড়ে পরিচিত। এখানে অবস্থিত কুমুদিনী হাসপাতাল ও কলেজ এবং ভবানীপুর আশ্রম এই অঞ্চলের পরিচয় বহন করে।
গঠনের ইতিহাস ও পটভূমি
-
মির্জাপুর অঞ্চলে ব্রিটিশ আমল থেকেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও জনসেবার প্রচলন ছিল।
-
১৯৮৩ সালে প্রশাসনিক পুনর্বিন্যাসে মির্জাপুর উপজেলা গঠিত হয়।
-
কুমুদিনী ও দানবীর রণদাপ্রসাদ সাহার অবদান এ এলাকার সমাজ উন্নয়নে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করে।
প্রশাসনিক তথ্য
বৈশিষ্ট্য | বিবরণ |
---|---|
উপজেলার নাম | মির্জাপুর উপজেলা |
গঠনের বছর | ১৯৮৩ সাল |
উপজেলা সদর | মির্জাপুর বাজার |
ইউনিয়ন পরিষদের সংখ্যা | ১৪টি ইউনিয়ন |
পৌরসভা | মির্জাপুর পৌরসভা (৯টি ওয়ার্ড) |
মোট আয়তন | প্রায় ৩৭৫.৩ বর্গকিলোমিটার |
মোট জনসংখ্যা (২০২৫) | আনুমানিক ৪.৮ লক্ষাধিক |
ধর্মীয় পরিসংখ্যান (আনুমানিক)
ধর্ম | জনসংখ্যার অনুপাত |
---|---|
ইসলাম | প্রায় ৮৮% |
হিন্দুধর্ম | প্রায় ১০% |
অন্যান্য | প্রায় ২% |
প্রশাসনিক বিভাগসমূহ
মির্জাপুর উপজেলা গঠিত ১৪টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা নিয়ে।
এখানে একটি থানা রয়েছে:
ইউনিয়নসমূহ:
-
ফতেপুর ইউনিয়ন
-
মৌচাক ইউনিয়ন
-
জামুর্কী ইউনিয়ন
-
ভাওড়া ইউনিয়ন
-
বাঁশতৈল ইউনিয়ন
-
আজগানা ইউনিয়ন
-
বানিয়ারা ইউনিয়ন
-
বাহাদুরপুর ইউনিয়ন
-
গোড়াই ইউনিয়ন
-
সোহাগী ইউনিয়ন
-
লতিফপুর ইউনিয়ন
-
দিঘী ইউনিয়ন
-
সুমনদী ইউনিয়ন
-
আনাইতারা ইউনিয়ন
পৌরসভা:
-
মির্জাপুর পৌরসভা (৯টি ওয়ার্ড)
থানা:
-
মির্জাপুর থানা
স্থানীয় সরকার কাঠামো
-
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (UNO) প্রশাসনের প্রধান হিসেবে কাজ করেন।
-
ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যগণ ইউনিয়ন পর্যায়ে প্রশাসন পরিচালনা করেন।
-
পৌরসভার মেয়র ও ওয়ার্ড কাউন্সিলরগণ শহর এলাকার সেবায় নিয়োজিত।
আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা
-
মির্জাপুর থানা এবং পুলিশ ফাঁড়ি সমূহ আইনশৃঙ্খলা নিশ্চিত করে।
-
বিভিন্ন গ্রামে কমিউনিটি পুলিশিং ও আনসার ভিডিপি সদস্য সক্রিয়।
-
দুর্যোগ মোকাবেলায় সিভিল ডিফেন্স ইউনিটও কাজ করছে।
অর্থনীতি ও শিল্প
-
কৃষিনির্ভর অর্থনীতি: ধান, সবজি, পাট, কলা, আম ও ফলমূল উৎপাদন।
-
স্থানীয় হাটবাজার, খামার এবং ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীক কাঠামো বিদ্যমান।
-
কারখানা ও হস্তশিল্প (কাঠ, বাঁশ ও তাঁত) এলাকাভেদে গড়ে উঠেছে।
-
প্রবাসী রেমিট্যান্সও অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
শিক্ষা ও প্রতিষ্ঠান
-
ভারতের অনুরূপ আদলে গঠিত কুমুদিনী কলেজ ও স্কুল,
-
মির্জাপুর মহিলা কলেজ, কারিগরি ও ভোকেশনাল প্রতিষ্ঠান,
-
সরকার ও বেসরকারি স্কুল, মাদ্রাসা ও ইংরেজি মাধ্যম বিদ্যালয়।
-
শিক্ষার হার (২০২৪): আনুমানিক ৮৪%
স্বাস্থ্য ব্যবস্থা
-
কুমুদিনী হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজ,
-
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স (৫০ শয্যা),
-
ইউনিয়ন পর্যায়ে কমিউনিটি ক্লিনিক ও স্বাস্থ্যকেন্দ্র,
-
স্বাস্থ্যসেবা, টিকাদান ও মাতৃসেবা কার্যক্রম সক্রিয়।
যোগাযোগ ও অবকাঠামো
-
ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের গোড়াই চৌরাস্তা দ্বারা সংযুক্ত।
-
স্থানীয় সড়ক, রিকশা, বাস, সিএনজি, অটো এবং রাইড শেয়ার ব্যবস্থার প্রসার।
-
রেলওয়ে স্টেশন (মির্জাপুর রেল স্টেশন) ও আশপাশে সংযোগ ব্যবস্থা ভালো।
পর্যটন ও দর্শনীয় স্থান
-
কুমুদিনী হাসপাতাল ও ভবানীপুর আশ্রম — সামাজিক সেবার ঐতিহাসিক নিদর্শন,
-
বিভিন্ন পুকুরপাড়, মন্দির, মসজিদ ও ধর্মীয় ঐতিহ্য।
-
স্থানীয় ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, গ্রামীণ উৎসব।
সংস্কৃতি ও জীবনধারা
-
গ্রামীণ জীবনধারার সঙ্গে আধুনিক শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবার সমন্বয়।
-
খাদ্য: দেশি মাছ, শাক-সবজি, মিষ্টান্ন, ভর্তা, চাল-ডাল খাবারের চল।
-
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, নাট্যচর্চা, বৈশাখী মেলা ও সাহিত্যিক আলোচনা জনপ্রিয়।
সারাংশ
মির্জাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও সমাজসেবার জন্য দেশের অন্যতম মডেল উপজেলা। কৃষিনির্ভর জীবনযাত্রা, আধুনিক স্বাস্থ্যসেবা, উন্নত যোগাযোগ এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের সমন্বয়ে এটি এক অনন্য উদাহরণ।
নিউজ ও আর্টিকেল
নিচের শিরোনামগুলোতে ক্লিক করে এই অংশ সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ নিবন্ধসমূহ পড়ুন:
আমাদের লক্ষ্য (ওয়েবসাইট ভিশন)
এই ওয়েবসাইটে আমরা তুলে ধরছি বাংলাদেশের প্রতিটি:
-
বিভাগ, জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন ও গ্রাম সংক্রান্ত তথ্য
-
ইতিহাস, জনসংখ্যা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, অর্থনীতি, কৃষি, পরিবেশ
-
পর্যটন স্থান, বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব, স্থানীয় উৎসব ও খাদ্যসংস্কৃতি
-
তথ্যনির্ভর, নির্ভরযোগ্য ও আপডেটেড একটি পূর্ণাঙ্গ জাতীয় তথ্যভাণ্ডার
যোগাযোগ করুন
আপনার এলাকার তথ্য আপডেট বা সংশোধনের জন্য আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
আপনার অংশগ্রহণই আমাদের এই তথ্যভান্ডারকে সমৃদ্ধ করে তুলবে।
ধন্যবাদ!
আপনি এখন বাংলাদেশের প্রতিটি প্রান্ত জানার যাত্রায় আছেন – আমাদের সাথেই থাকুন!