নদী-বেষ্টিত শিল্প ও কৃষিভিত্তিক সমৃদ্ধ জেলা
ঝালকাঠি জেলা বাংলাদেশের বরিশাল বিভাগের অন্তর্গত একটি নদীমাতৃক এবং কৃষিভিত্তিক সমৃদ্ধ অঞ্চল। এখানকার নদী-খাল, কৃষি উৎপাদন, শিল্প-কারখানা এবং ঐতিহ্যবাহী নৌবাণিজ্য ঝালকাঠিকে বিশেষ পরিচিতি দিয়েছে। নদীবন্দর, খাদ্যশিল্প এবং গ্রামীণ জীবনযাত্রার বৈচিত্র্য এই জেলার মূল বৈশিষ্ট্য।
গঠনের ইতিহাস ও পটভূমি
-
মুঘল আমলে ঝালকাঠি একটি গুরুত্বপূর্ণ নৌবাণিজ্যের কেন্দ্র ছিল।
-
ব্রিটিশ আমলে ঝালকাঠি প্রশাসনিকভাবে বরিশাল জেলার অংশ ছিল।
-
১৯৮৪ সালে ঝালকাঠি আলাদা জেলা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়।
-
ঐতিহাসিকভাবে এটি ছিল নদীবাণিজ্য ও কৃষিভিত্তিক অঞ্চলের প্রধান অংশ।
প্রশাসনিক তথ্য
বৈশিষ্ট্য | বিবরণ |
---|---|
জেলার নাম | ঝালকাঠি জেলা |
গঠনের বছর | ১৯৮৪ সাল |
জেলা সদর দপ্তর | ঝালকাঠি শহর |
উপজেলার সংখ্যা | ৪টি উপজেলা |
ইউনিয়ন পরিষদ | প্রায় ৩২টি ইউনিয়ন |
মোট আয়তন | প্রায় ৭০৬ বর্গকিলোমিটার |
মোট জনসংখ্যা (২০২৫) | প্রায় ৭ লক্ষাধিক |
ধর্মীয় পরিসংখ্যান (আনুমানিক)
ধর্ম | জনসংখ্যার অনুপাত |
---|---|
ইসলাম | প্রায় ৮৭% |
হিন্দুধর্ম | প্রায় ১২% |
অন্যান্য | প্রায় ১% |
প্রশাসনিক বিভাগসমূহ
ঝালকাঠি জেলার অন্তর্গত ৪টি উপজেলা:
-
ঝালকাঠি সদর উপজেলা
-
নলছিটি উপজেলা
-
রাজাপুর উপজেলা
-
কাঠালিয়া উপজেলা
স্থানীয় সরকার কাঠামো
-
জেলা প্রশাসক (DC) জেলার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা।
-
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (UNO) উপজেলা পর্যায়ে প্রশাসন পরিচালনা করেন।
-
ইউনিয়ন পরিষদ ও পৌরসভা দ্বারা স্থানীয় শাসন পরিচালিত হয়।
নেতৃত্ব ও শাসনব্যবস্থা
-
বিভাগীয় কমিশনার বরিশাল বিভাগের অধীনে কার্যক্রম পরিচালিত হয়।
-
জেলা প্রশাসক ঝালকাঠি জেলার প্রধান প্রশাসনিক কর্মকর্তা।
-
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌরসভাগুলোর মেয়র স্থানীয় প্রশাসনের নেতৃত্ব দেন।
আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা
-
ঝালকাঠি জেলা পুলিশ নিরাপত্তা রক্ষায় নিয়োজিত।
-
প্রতিটি উপজেলায় থানা ও ফায়ার সার্ভিস ইউনিট সক্রিয় রয়েছে।
-
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় বিশেষ ইউনিটের কার্যক্রম পরিচালিত হয়।
অর্থনীতি ও শিল্প
-
কৃষিপণ্য: ধান, সবজি, সুপারি, নারিকেল
-
শিল্প: খাদ্যপ্রক্রিয়াজাত শিল্প, নৌকা নির্মাণ, কাঠ শিল্প
-
নদীবন্দরভিত্তিক ব্যবসা-বাণিজ্য
-
ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের বিকাশ
শিক্ষা ও প্রতিষ্ঠান
-
ঝালকাঠি সরকারি কলেজ, নলছিটি সরকারি কলেজসহ বেশ কিছু উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান
-
মাধ্যমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বিস্তৃতি
-
মাদ্রাসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও উল্লেখযোগ্য
-
শিক্ষার হার (২০২৪): আনুমানিক ৭৫%
স্বাস্থ্য ব্যবস্থা
-
ঝালকাঠি সদর হাসপাতাল: প্রধান স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র
-
প্রতিটি উপজেলায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স
-
কিছু উন্নত মানের বেসরকারি ক্লিনিক বিদ্যমান
যোগাযোগ ও অবকাঠামো
-
সড়ক: ঝালকাঠি-বরিশাল মহাসড়ক, আন্তঃউপজেলা সড়ক নেটওয়ার্ক
-
নদীপথ: ঝালকাঠি নদীবন্দর (আভ্যন্তরীণ নৌ যোগাযোগ)
-
উন্নয়নাধীন সড়ক ও নৌবন্দর আধুনিকীকরণ প্রকল্প
পর্যটন ও দর্শনীয় স্থান
-
গাবখান-চাঁদকাঠি নদীর সৌন্দর্য
-
রাজাপুরের প্রাচীন স্থাপনা
-
বিভিন্ন নদীপথভ্রমণ ও নৌকা ভ্রমণ
-
স্থানীয় ঐতিহ্যবাহী বাজার ও হাট
সংস্কৃতি ও জীবনধারা
-
গ্রামীণ জীবনধারা ও নদী-ভিত্তিক সংস্কৃতি
-
খাবার: নদীর তাজা মাছ, পিঠাপুলি, নারিকেল-ভিত্তিক মিষ্টান্ন
-
মেলার আয়োজন, নৌকা বাইচ এবং লোকসাংস্কৃতিক উৎসব
-
কারিগরি ও হস্তশিল্পের ঐতিহ্য
সারাংশ
ঝালকাঠি জেলা তার নদীঘেরা প্রকৃতি, কৃষিভিত্তিক অর্থনীতি এবং ঐতিহ্যবাহী শিল্পকলা দিয়ে পরিচিত। খাদ্যপ্রক্রিয়াকরণ শিল্প ও নদীবন্দরভিত্তিক বাণিজ্য এই জেলার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। জীবনধারা, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং ঐতিহ্যের মিশেলে ঝালকাঠি বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের এক অনন্য জেলা হিসেবে গড়ে উঠেছে।
নিউজ ও আর্টিকেল
নিচের শিরোনামগুলোতে ক্লিক করে এই অংশ সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ নিবন্ধসমূহ পড়ুন:
আমাদের লক্ষ্য (ওয়েবসাইট ভিশন)
এই ওয়েবসাইটে আমরা তুলে ধরছি বাংলাদেশের প্রতিটি:
-
বিভাগ, জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন ও গ্রাম সংক্রান্ত তথ্য
-
ইতিহাস, জনসংখ্যা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, অর্থনীতি, কৃষি, পরিবেশ
-
পর্যটন স্থান, বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব, স্থানীয় উৎসব ও খাদ্যসংস্কৃতি
-
তথ্যনির্ভর, নির্ভরযোগ্য ও আপডেটেড একটি পূর্ণাঙ্গ জাতীয় তথ্যভাণ্ডার
যোগাযোগ করুন
আপনার এলাকার তথ্য আপডেট বা সংশোধনের জন্য আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
আপনার অংশগ্রহণই আমাদের এই তথ্যভান্ডারকে সমৃদ্ধ করে তুলবে।
ধন্যবাদ!
আপনি এখন বাংলাদেশের প্রতিটি প্রান্ত জানার যাত্রায় আছেন – আমাদের সাথেই থাকুন!