ঝিনাইদহ জেলা

বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের কৃষি ও সংস্কৃতির প্রাণশক্তি

ঝিনাইদহ জেলা বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের একটি গুরুত্বপূর্ণ কৃষিপ্রধান ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যবাহী জেলা। সবুজ-শ্যামল পরিবেশ, সমৃদ্ধ কৃষি উৎপাদন এবং লোকসংস্কৃতির প্রাণবন্ত চর্চার জন্য এ জেলা পরিচিত। এ জেলার কৃষি, শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে অবদান বাংলাদেশের সার্বিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।


গঠনের ইতিহাস ও পটভূমি

  • মুঘল আমলে ঝিনাইদহ অঞ্চল গুরুত্বপূর্ণ কৃষি ও বাণিজ্যকেন্দ্র ছিল।

  • ব্রিটিশ শাসনামলে ঝিনাইদহ ছিল যশোর জেলার একটি মহকুমা।

  • ১৯৮৪ সালে ঝিনাইদহ জেলা হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়।


প্রশাসনিক তথ্য

বৈশিষ্ট্যবিবরণ
জেলার নামঝিনাইদহ জেলা
গঠনের বছরআনুষ্ঠানিকভাবে ১৯৮৪ সাল
জেলা সদর দপ্তরঝিনাইদহ শহর
উপজেলার সংখ্যা৬টি উপজেলা
ইউনিয়ন পরিষদপ্রায় ৬৭টি ইউনিয়ন
মোট আয়তনআনুমানিক ১,৯৬৩ বর্গকিলোমিটার
মোট জনসংখ্যা (২০২৫)প্রায় ১৯ লক্ষাধিক

ধর্মীয় পরিসংখ্যান (আনুমানিক)

ধর্মজনসংখ্যার অনুপাত
ইসলামপ্রায় ৮৮%
হিন্দুধর্মপ্রায় ১১%
অন্যান্যপ্রায় ১%

প্রশাসনিক বিভাগসমূহ

ঝিনাইদহ জেলার অন্তর্গত ৬টি উপজেলা:

  • ঝিনাইদহ সদর উপজেলা

  • শৈলকুপা উপজেলা

  • হরিণাকুন্ডু উপজেলা

  • কালীগঞ্জ উপজেলা

  • কোটচাঁদপুর উপজেলা

  • মহেশপুর উপজেলা


স্থানীয় সরকার কাঠামো

  • জেলা প্রশাসক (DC) জেলার প্রধান প্রশাসনিক কর্মকর্তা।

  • উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (UNO) উপজেলা পর্যায়ে দায়িত্ব পালন করেন।

  • ইউনিয়ন পরিষদ ও পৌরসভায় নির্বাচিত জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে স্থানীয় শাসন পরিচালিত হয়।


নেতৃত্ব ও শাসনব্যবস্থা

  • বিভাগীয় কমিশনার: খুলনা বিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তা।

  • জেলা প্রশাসক: ঝিনাইদহ জেলার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা।

  • উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌর মেয়রগণ স্থানীয় প্রশাসন পরিচালনা করেন।


আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা

  • প্রতিটি উপজেলায় থানা ও ফাঁড়ি বিদ্যমান।

  • পুলিশ, র‍্যাব ও স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিরাপত্তা রক্ষায় নিয়োজিত।

  • সীমান্তবর্তী উপজেলা মহেশপুরে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (BGB) বিশেষ নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করে।


অর্থনীতি ও শিল্প

  • কৃষিপণ্য: ধান, পাট, গম, আখ এবং বিভিন্ন মৌসুমি ফল।

  • ক্ষুদ্র শিল্প: তাঁত শিল্প, হস্তশিল্প ও কৃষিভিত্তিক পণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ।

  • স্থানীয় বাজারকেন্দ্রিক ব্যবসা ও বাণিজ্য সম্প্রসারিত হচ্ছে।


শিক্ষা ও প্রতিষ্ঠান

  • সরকারি কে.সি. কলেজ (ঝিনাইদহ সরকারি কলেজ), নুরুন্নাহার মহিলা কলেজ, কালীগঞ্জ পাইলট হাই স্কুল।

  • মাধ্যমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বিস্তৃত নেটওয়ার্ক।

  • শিক্ষার হার (২০২৪): আনুমানিক ৭৭%


স্বাস্থ্য ব্যবস্থা

  • ঝিনাইদহ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল: জেলার প্রধান স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র।

  • প্রতিটি উপজেলায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং কিছু বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিক সক্রিয় রয়েছে।


যোগাযোগ ও অবকাঠামো

  • সড়ক: ঝিনাইদহ-ঢাকা মহাসড়ক, ঝিনাইদহ-খুলনা মহাসড়ক।

  • রেল: কালীগঞ্জ রেলস্টেশন এবং কোটচাঁদপুর রেলস্টেশন।

  • অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ ব্যবস্থায় সড়ক পরিবহন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।


পর্যটন ও দর্শনীয় স্থান

  • ঐতিহাসিক: বারবাজারের প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন, ধর্মদাস পীরের মাজার।

  • প্রাকৃতিক: নদী ও খালভিত্তিক প্রাকৃতিক সৌন্দর্য।

  • সাংস্কৃতিক: গ্রামীণ মেলা, পল্লীসঙ্গীত উৎসব।


সংস্কৃতি ও জীবনধারা

  • খাদ্য: দেশীয় চালের ভাত, পাটালি গুড়, মৌসুমি ফলের ব্যবহার।

  • পোশাক: স্থানীয় তাঁতের শাড়ি, হস্তনির্মিত পোশাক ও সামগ্রী।

  • শিল্প ও সংস্কৃতি: যাত্রাপালা, কবিগান, বাউল সংগীতের ঐতিহ্য।

  • ক্রীড়া: ফুটবল, হাডুডু এবং গ্রামীণ খেলা অত্যন্ত জনপ্রিয়।


সারাংশ

ঝিনাইদহ জেলা তার কৃষিভিত্তিক উন্নয়ন, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং সামাজিক গতিশীলতার জন্য বিশেষভাবে পরিচিত। কৃষি, শিক্ষা এবং সাংস্কৃতিক বিকাশের এক অনন্য সমন্বয়ে ঝিনাইদহ বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের একটি প্রগতিশীল জেলা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে।


নিউজ ও আর্টিকেল

নিচের শিরোনামগুলোতে ক্লিক করে এই অংশ সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ নিবন্ধসমূহ পড়ুন:


আমাদের লক্ষ্য (ওয়েবসাইট ভিশন)

এই ওয়েবসাইটে আমরা তুলে ধরছি বাংলাদেশের প্রতিটি:

  • বিভাগ, জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন ও গ্রাম সংক্রান্ত তথ্য

  • ইতিহাস, জনসংখ্যা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, অর্থনীতি, কৃষি, পরিবেশ

  • পর্যটন স্থান, বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব, স্থানীয় উৎসব ও খাদ্যসংস্কৃতি

  • তথ্যনির্ভর, নির্ভরযোগ্য ও আপডেটেড একটি পূর্ণাঙ্গ জাতীয় তথ্যভাণ্ডার


যোগাযোগ করুন

আপনার এলাকার তথ্য আপডেট বা সংশোধনের জন্য আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করুন
আপনার অংশগ্রহণই আমাদের এই তথ্যভান্ডারকে সমৃদ্ধ করে তুলবে।


ধন্যবাদ!
আপনি এখন বাংলাদেশের প্রতিটি প্রান্ত জানার যাত্রায় আছেন – আমাদের সাথেই থাকুন!