নদী, চর ও ইতিহাসসমৃদ্ধ দক্ষিণাঞ্চলের প্রান্তিক কিন্তু সম্ভাবনাময় জনপদ
গোসাইরহাট উপজেলা শরীয়তপুর জেলার দক্ষিণাংশে অবস্থিত একটি নদী ও চরঘেরা উপজেলা। এটি মেঘনা নদীর তীরবর্তী একটি জনবহুল এলাকা, যেখানে কৃষি, মৎস্য, চরজীবন ও ধর্মীয় ঐতিহ্য মিলে গড়ে উঠেছে একটি প্রাণবন্ত ও সংগ্রামী সমাজব্যবস্থা।
গঠনের ইতিহাস ও পটভূমি
-
“গোসাইরহাট” নামটি এসেছে ‘গোসাঁই’ (সাধু) ও ‘হাট’ শব্দের সংমিশ্রণে, যেখানে একসময় সাধুদের আস্তানা ও হাট বসত।
-
এটি ঐতিহ্যবাহী নদীঘেরা বাজার এলাকা হিসেবে পরিচিত ছিল।
-
১৯৮৩ সালে এটি সরকারিভাবে উপজেলা হিসেবে গঠিত হয়।
প্রশাসনিক তথ্য
| বৈশিষ্ট্য | বিবরণ |
|---|---|
| উপজেলার নাম | গোসাইরহাট উপজেলা |
| গঠনের বছর | ১৯৮৩ সাল |
| উপজেলা সদর | গোসাইরহাট বাজার |
| ইউনিয়ন পরিষদের সংখ্যা | ৮টি ইউনিয়ন |
| পৌরসভা | গোসাইরহাট পৌরসভা (৯টি ওয়ার্ড) |
| মোট আয়তন | প্রায় ১৯৮.৭৫ বর্গকিলোমিটার |
| মোট জনসংখ্যা (২০২৫) | আনুমানিক ২.১ লক্ষাধিক |
ধর্মীয় পরিসংখ্যান (আনুমানিক)
| ধর্ম | জনসংখ্যার অনুপাত |
|---|---|
| ইসলাম | প্রায় ৯২% |
| হিন্দুধর্ম | প্রায় ৭% |
| অন্যান্য | প্রায় ১% |
প্রশাসনিক বিভাগসমূহ
গোসাইরহাট উপজেলা গঠিত ৮টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা নিয়ে।
এখানে একটি থানা রয়েছে।
ইউনিয়নসমূহ:
-
নাগেরপাড়া ইউনিয়ন
-
নলমুদি ইউনিয়ন
-
কোদালপুর ইউনিয়ন
-
কুচাইপট্টি ইউনিয়ন
-
ইদিলপুর ইউনিয়ন
-
গুয়াখোলা ইউনিয়ন
-
ডহরকান্দি ইউনিয়ন
-
জয়নগর ইউনিয়ন
পৌরসভা:
-
গোসাইরহাট পৌরসভা (৯টি ওয়ার্ড)
থানা:
-
গোসাইরহাট থানা
স্থানীয় সরকার কাঠামো
-
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (UNO) প্রশাসনিক প্রধান।
-
জনপ্রতিনিধিরা ইউনিয়ন পরিষদ ও পৌরসভার মাধ্যমে স্থানীয় সরকার পরিচালনা করেন।
-
বিভিন্ন দপ্তর (কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, প্রকৌশল) সেবা ও উন্নয়ন কার্যক্রমে নিয়োজিত।
আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা
-
গোসাইরহাট থানা অপরাধ দমন, সুশাসন ও দুর্যোগ মোকাবেলায় সক্রিয়।
-
চরাঞ্চলে বিশেষ টহল ও দুর্গম এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
-
বাজার ও ধর্মীয় স্থানে পর্যাপ্ত পুলিশি ব্যবস্থা বিদ্যমান।
অর্থনীতি ও শিল্প
-
ধান, পাট, সরিষা, ডাল ও সবজি চাষ সাধারণ মানুষের আয়ের প্রধান উৎস।
-
মেঘনা নদী ও খালে মাছচাষ এবং পেশাদার জেলেদের কার্যক্রম।
-
নারীদের হস্তশিল্প, সেলাই ও ক্ষুদ্র ব্যবসায় অংশগ্রহণ উল্লেখযোগ্য।
শিক্ষা ও প্রতিষ্ঠান
-
সরকারি কলেজ, মহিলা কলেজ, মাধ্যমিক বিদ্যালয়, প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসা রয়েছে।
-
এনজিও ও সরকারি উদ্যোগে চরাঞ্চলে শিক্ষা সম্প্রসারণ চলছে।
-
শিক্ষার হার (২০২৪): আনুমানিক ৭৬%
স্বাস্থ্য ব্যবস্থা
-
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র ও কমিউনিটি ক্লিনিক সক্রিয়।
-
চর ও নদীবেষ্টিত এলাকায় মোবাইল চিকিৎসা, টিকাদান ও সচেতনতামূলক কার্যক্রম জোরদার।
-
পরিবার পরিকল্পনা ও মা-শিশু স্বাস্থ্যসেবা উন্নত হচ্ছে।
যোগাযোগ ও অবকাঠামো
-
সড়কপথে শরীয়তপুর সদর, ভেদরগঞ্জ ও হরিণাঘাট এলাকার সাথে সংযুক্ত।
-
চরাঞ্চলে নৌপথ ও ট্রলার পরিবহন প্রচলিত।
-
রাস্তা, সেতু, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বাজার উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন।
পর্যটন ও দর্শনীয় স্থান
-
মেঘনা নদীর পাড়, চরাঞ্চলের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য
-
ঐতিহ্যবাহী মসজিদ, পূজামণ্ডপ ও বাজার কেন্দ্র
-
বৈশাখী মেলা, নদীপথ ভ্রমণ ও হাটবাজার পর্যটকদের আকর্ষণ করে
সংস্কৃতি ও জীবনধারা
-
চরকেন্দ্রিক জীবনধারা, বাউল গান, পালাগান ও গ্রামীণ উৎসব সমৃদ্ধ।
-
খাদ্য: নদীর টাটকা মাছ, ভর্তা-পান্তা, শীতল পিঠা ও গুড় জনপ্রিয়।
-
ধর্মীয় সম্প্রীতি ও সামাজিক বন্ধন এখানকার জীবনধারার বৈশিষ্ট্য।
সারাংশ
গোসাইরহাট উপজেলা হলো শরীয়তপুর জেলার একটি নদী-চরঘেরা সংগ্রামী জনপদ, যেখানে প্রকৃতি ও মানুষের মিলনে গড়ে উঠেছে সম্ভাবনাময় উন্নয়নের ভিত্তি। কৃষি, শিক্ষা ও ধর্মীয় ঐতিহ্যের মাধ্যমে এটি একটি শান্তিপূর্ণ, উৎপাদনশীল ও সাংস্কৃতিকভাবে সমৃদ্ধ উপজেলা।
নিউজ ও আর্টিকেল
নিচের শিরোনামগুলোতে ক্লিক করে এই অংশ সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ নিবন্ধসমূহ পড়ুন:
আমাদের লক্ষ্য (ওয়েবসাইট ভিশন)
এই ওয়েবসাইটে আমরা তুলে ধরছি বাংলাদেশের প্রতিটি:
-
বিভাগ, জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন ও গ্রাম সংক্রান্ত তথ্য
-
ইতিহাস, জনসংখ্যা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, অর্থনীতি, কৃষি, পরিবেশ
-
পর্যটন স্থান, বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব, স্থানীয় উৎসব ও খাদ্যসংস্কৃতি
-
তথ্যনির্ভর, নির্ভরযোগ্য ও আপডেটেড একটি পূর্ণাঙ্গ জাতীয় তথ্যভাণ্ডার
যোগাযোগ করুন
আপনার এলাকার তথ্য আপডেট বা সংশোধনের জন্য আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
আপনার অংশগ্রহণই আমাদের এই তথ্যভান্ডারকে সমৃদ্ধ করে তুলবে।
ধন্যবাদ!
আপনি এখন বাংলাদেশের প্রতিটি প্রান্ত জানার যাত্রায় আছেন – আমাদের সাথেই থাকুন!