পদ্মার ভাঙনঘেরা ইতিহাস, সাহসিকতা ও সম্ভাবনার জনপদ
নড়িয়া উপজেলা শরীয়তপুর জেলার একটি ঐতিহাসিক ও প্রাকৃতিকভাবে চ্যালেঞ্জপূর্ণ উপজেলা, যা পদ্মা নদীর তীরে অবস্থিত। দীর্ঘদিন ধরে পদ্মা নদীর ভাঙন এই অঞ্চলের মানুষের জীবনকে প্রভাবিত করলেও বর্তমানে সেতু, বাঁধ এবং অবকাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে এটি দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে।
গঠনের ইতিহাস ও পটভূমি
-
“নড়িয়া” নামের উৎপত্তি নিয়ে বিভিন্ন মত রয়েছে, একটি মতে এটি এসেছে ‘নাড়িয়া’ শব্দ থেকে, অর্থাৎ নদীঘেরা।
-
এটি একসময় মাদারীপুর জেলার অন্তর্গত ছিল; ১৯৮৩ সালে শরীয়তপুর জেলার সাথে উপজেলা হিসেবেও প্রতিষ্ঠা পায়।
-
ঐতিহাসিকভাবে এটি নদী-বাণিজ্য, মাদ্রাসা ও শিক্ষার কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত।
প্রশাসনিক তথ্য
বৈশিষ্ট্য | বিবরণ |
---|---|
উপজেলার নাম | নড়িয়া উপজেলা |
গঠনের বছর | ১৯৮৩ সাল |
উপজেলা সদর | নড়িয়া বাজার |
ইউনিয়ন পরিষদের সংখ্যা | ১০টি ইউনিয়ন |
পৌরসভা | নড়িয়া পৌরসভা (৯টি ওয়ার্ড) |
মোট আয়তন | প্রায় ১৯১.৮৭ বর্গকিলোমিটার |
মোট জনসংখ্যা (২০২৫) | আনুমানিক ২.৫ লক্ষাধিক |
ধর্মীয় পরিসংখ্যান (আনুমানিক)
ধর্ম | জনসংখ্যার অনুপাত |
---|---|
ইসলাম | প্রায় ৯১% |
হিন্দুধর্ম | প্রায় ৮% |
অন্যান্য | প্রায় ১% |
প্রশাসনিক বিভাগসমূহ
নড়িয়া উপজেলা গঠিত ১০টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা নিয়ে।
এখানে একটি থানা রয়েছে।
ইউনিয়নসমূহ:
-
নড়িয়া ইউনিয়ন
-
সুরেশ্বর ইউনিয়ন
-
ডিঙ্গামানিক ইউনিয়ন
-
কেদারপুর ইউনিয়ন
-
চরআত্রা ইউনিয়ন
-
ঘড়িষার ইউনিয়ন
-
ভোজেশ্বর ইউনিয়ন
-
মৌলভীকান্দি ইউনিয়ন
-
নারায়ণপুর ইউনিয়ন
-
রাজনগর ইউনিয়ন
পৌরসভা:
-
নড়িয়া পৌরসভা (৯টি ওয়ার্ড)
থানা:
-
নড়িয়া থানা
স্থানীয় সরকার কাঠামো
-
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (UNO) প্রশাসনিক দায়িত্বে রয়েছেন।
-
পৌর মেয়র ও ইউনিয়ন চেয়ারম্যানগণ স্থানীয় সরকার পরিচালনা করেন।
-
শিক্ষা, কৃষি, প্রকৌশল, স্বাস্থ্য ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা দপ্তর সক্রিয়ভাবে কাজ করছে।
আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা
-
নড়িয়া থানা এলাকার শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে সক্রিয়।
-
চরাঞ্চল ও নদীভাঙন এলাকা বিশেষ নজরদারিতে রাখা হয়।
-
সামাজিক অপরাধ প্রতিরোধে কমিউনিটি পুলিশিং কার্যক্রম চালু।
অর্থনীতি ও শিল্প
-
ধান, পাট, সরিষা ও সবজি চাষ অর্থনীতির মূল স্তম্ভ।
-
চরাঞ্চলে গবাদিপশু পালন ও নদীতে মাছ ধরা প্রচলিত।
-
হাটবাজার ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড প্রসারমান।
শিক্ষা ও প্রতিষ্ঠান
-
নড়িয়া কলেজ, মাধ্যমিক বিদ্যালয়, প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসা রয়েছে।
-
চর ও দুর্গম এলাকায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সম্প্রসারণ চলমান।
-
শিক্ষার হার (২০২৪): আনুমানিক ৮০%
স্বাস্থ্য ব্যবস্থা
-
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, কমিউনিটি ক্লিনিক ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র সক্রিয়।
-
নদীভাঙন ও চর এলাকায় মোবাইল মেডিকেল ইউনিট, মা ও শিশু স্বাস্থ্যসেবা।
-
পরিবার পরিকল্পনা ও টিকাদান কর্মসূচি কার্যকরভাবে পরিচালিত হচ্ছে।
যোগাযোগ ও অবকাঠামো
-
পদ্মা নদী সংলগ্ন এলাকায় বাঁধ ও সড়ক উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন।
-
সড়কপথে শরীয়তপুর, জাজিরা, ভেদরগঞ্জ ও মাদারীপুরের সঙ্গে সংযুক্ত।
-
ফেরিঘাট, খেয়াঘাট, চরবন্দর ব্যবহৃত হয় নৌচলাচলে।
পর্যটন ও দর্শনীয় স্থান
-
সুরেশ্বর দরগাহ শরীফ, পদ্মা নদী ও চরাঞ্চল,
-
ঐতিহাসিক মসজিদ ও মন্দির, স্থানীয় মেলা ও চরভ্রমণ পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয়
সংস্কৃতি ও জীবনধারা
-
চরজীবন, নৌকাবাইচ, বাউল সংগীত ও কবিগান এখানকার সংস্কৃতির অংশ।
-
খাদ্য: নদীর টাটকা মাছ, গুড়-পিঠা, ভর্তা-পান্তা ও নারকেলের মিষ্টান্ন।
-
ধর্মীয় উৎসব ও সামাজিক সম্প্রীতির অনন্য দৃষ্টান্ত দেখা যায়।
সারাংশ
নড়িয়া উপজেলা হলো শরীয়তপুর জেলার একটি নদীঘেরা ঐতিহাসিক জনপদ, যেখানে পদ্মার চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও সাহসী জনগোষ্ঠী কৃষি, শিক্ষা ও সংস্কৃতির বিকাশে এগিয়ে যাচ্ছে। এটি সম্ভাবনা ও সংগ্রামের এক উজ্জ্বল উদাহরণ।
নিউজ ও আর্টিকেল
নিচের শিরোনামগুলোতে ক্লিক করে এই অংশ সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ নিবন্ধসমূহ পড়ুন:
আমাদের লক্ষ্য (ওয়েবসাইট ভিশন)
এই ওয়েবসাইটে আমরা তুলে ধরছি বাংলাদেশের প্রতিটি:
-
বিভাগ, জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন ও গ্রাম সংক্রান্ত তথ্য
-
ইতিহাস, জনসংখ্যা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, অর্থনীতি, কৃষি, পরিবেশ
-
পর্যটন স্থান, বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব, স্থানীয় উৎসব ও খাদ্যসংস্কৃতি
-
তথ্যনির্ভর, নির্ভরযোগ্য ও আপডেটেড একটি পূর্ণাঙ্গ জাতীয় তথ্যভাণ্ডার
যোগাযোগ করুন
আপনার এলাকার তথ্য আপডেট বা সংশোধনের জন্য আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
আপনার অংশগ্রহণই আমাদের এই তথ্যভান্ডারকে সমৃদ্ধ করে তুলবে।
ধন্যবাদ!
আপনি এখন বাংলাদেশের প্রতিটি প্রান্ত জানার যাত্রায় আছেন – আমাদের সাথেই থাকুন!