ঐতিহ্য, কৃষি ও শিক্ষা সমৃদ্ধ রাজবাড়ীর জনপদ
পাংশা উপজেলা রাজবাড়ী জেলার দক্ষিণ-পূর্বাংশে অবস্থিত একটি বৃহৎ ও সাংস্কৃতিকভাবে সমৃদ্ধ জনপদ। কৃষি, শিক্ষা, ধর্মীয় সম্প্রীতি ও গ্রামীণ ঐতিহ্যের এক অনন্য মেলবন্ধন এই উপজেলাকে জেলার অন্যতম প্রাণকেন্দ্রে পরিণত করেছে।
গঠনের ইতিহাস ও পটভূমি
-
“পাংশা” নামটির উৎপত্তি নিয়ে নানা জনশ্রুতি থাকলেও এটি মূলত একটি প্রাচীন গ্রামীণ বাজার কেন্দ্র ছিল।
-
ব্রিটিশ আমলে এটি শিক্ষাকেন্দ্র ও প্রশাসনিক উপকেন্দ্র হিসেবে পরিচিতি পায়।
-
১৯৮৩ সালে পাংশা সরকারিভাবে উপজেলা হিসেবে গঠিত হয়।
প্রশাসনিক তথ্য
বৈশিষ্ট্য | বিবরণ |
---|---|
উপজেলার নাম | পাংশা উপজেলা |
গঠনের বছর | ১৯৮৩ সাল |
উপজেলা সদর | পাংশা বাজার |
ইউনিয়ন পরিষদের সংখ্যা | ১০টি ইউনিয়ন |
পৌরসভা | পাংশা পৌরসভা (৯টি ওয়ার্ড) |
মোট আয়তন | প্রায় ২৮০.০৫ বর্গকিলোমিটার |
মোট জনসংখ্যা (২০২৫) | আনুমানিক ৩.৯ লক্ষাধিক |
ধর্মীয় পরিসংখ্যান (আনুমানিক)
ধর্ম | জনসংখ্যার অনুপাত |
---|---|
ইসলাম | প্রায় ৮৯% |
হিন্দুধর্ম | প্রায় ১০% |
অন্যান্য | প্রায় ১% |
প্রশাসনিক বিভাগসমূহ
পাংশা উপজেলা গঠিত ১০টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা নিয়ে।
এখানে একটি থানা রয়েছে।
ইউনিয়নসমূহ:
-
বাবুপাড়া ইউনিয়ন
-
মৌরাট ইউনিয়ন
-
সরিষা ইউনিয়ন
-
মাছপাড়া ইউনিয়ন
-
চরঘোষপুর ইউনিয়ন
-
হাবাসপুর ইউনিয়ন
-
কশবামাজাইল ইউনিয়ন
-
কালুখালী ইউনিয়ন
-
বাহাদুরপুর ইউনিয়ন
-
মিত্রবাড়িয়া ইউনিয়ন
পৌরসভা:
-
পাংশা পৌরসভা (৯টি ওয়ার্ড)
থানা:
-
পাংশা থানা
স্থানীয় সরকার কাঠামো
-
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (UNO) প্রশাসনের প্রধান।
-
ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও পৌর মেয়র সরাসরি নির্বাচিত।
-
উপজেলা পরিষদ ও স্থানীয় দপ্তরসমূহ শিক্ষা, কৃষি ও স্বাস্থ্যসেবায় সক্রিয়।
আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা
-
পাংশা থানা আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে কাজ করে।
-
বাজার, স্কুল, ধর্মীয় উপাসনালয় ও হাটবাজার এলাকায় পুলিশ টহল সক্রিয়।
-
স্থানীয় কমিউনিটি পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবক দলের সহায়তায় নিরাপত্তা নিশ্চিত।
অর্থনীতি ও শিল্প
-
প্রধান কৃষিপণ্য: ধান, পাট, সরিষা, গম, আলু ও বিভিন্ন শাকসবজি।
-
গ্রামীণ হস্তশিল্প, পোশাক তৈরি ও ক্ষুদ্র বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান বৃদ্ধি পাচ্ছে।
-
পাংশা হাট ও আন্তঃউপজেলা বাজার অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
শিক্ষা ও প্রতিষ্ঠান
-
সরকারি পাংশা কলেজ, মহিলা কলেজ, উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মাদ্রাসা।
-
প্রাথমিক বিদ্যালয় ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিস্তৃত।
-
শিক্ষার হার (২০২৪): আনুমানিক ৮১%
স্বাস্থ্য ব্যবস্থা
-
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স (৫০ শয্যা), ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র ও ক্লিনিক।
-
পরিবার পরিকল্পনা, টিকাদান ও মা-শিশু স্বাস্থ্যসেবা সম্প্রসারিত।
-
স্থানীয় ক্লিনিক, ফার্মেসি ও কমিউনিটি সেবাকেন্দ্র কার্যকর।
যোগাযোগ ও অবকাঠামো
-
সড়কপথে গোয়ালন্দ, রাজবাড়ী, পাবনা ও ফরিদপুর সংযোগ সহজ।
-
পাকা ও আধাপাকা সড়ক, ব্রিজ-কালভার্ট নির্মাণ সম্প্রসারিত হয়েছে।
-
নৌপথ ও রেলপথের সীমিত ব্যবহারও রয়েছে।
পর্যটন ও দর্শনীয় স্থান
-
পাংশা রাজবাড়ী, ঐতিহাসিক মসজিদ, শিবমন্দির ও পুকুরঘাট
-
পাংশা হাট, নদীঘেরা প্রাকৃতিক পরিবেশ ও লোকসংস্কৃতির মেলবন্ধন
-
ধর্মীয় উৎসব ও গ্রামীণ মেলা স্থানীয় পর্যটনে প্রাণসঞ্চার করে
সংস্কৃতি ও জীবনধারা
-
পল্লীগীতি, কবিগান, লোকনাট্য ও গ্রামীণ সুরের বহমানতা রয়েছে।
-
জনপ্রিয় খাবার: শাক-ভর্তা, মাছ-ভাত, চিঁড়া-দই, মৌসুমি পিঠা।
-
ঈদ, দুর্গাপূজা, নবান্ন ও হাট উৎসব সামাজিক সম্প্রীতির প্রতীক।
সারাংশ
পাংশা উপজেলা রাজবাড়ী জেলার একটি কৃষিপ্রধান, শিক্ষাবান্ধব ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ জনপদ। এখানকার সমাজ, অর্থনীতি ও শিক্ষা কাঠামো উন্নয়নশীল ধারায় এগিয়ে চলেছে — যা একে ভবিষ্যতের সম্ভাবনাময় উপজেলায় পরিণত করছে।
নিউজ ও আর্টিকেল
নিচের শিরোনামগুলোতে ক্লিক করে এই অংশ সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ নিবন্ধসমূহ পড়ুন:
আমাদের লক্ষ্য (ওয়েবসাইট ভিশন)
এই ওয়েবসাইটে আমরা তুলে ধরছি বাংলাদেশের প্রতিটি:
-
বিভাগ, জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন ও গ্রাম সংক্রান্ত তথ্য
-
ইতিহাস, জনসংখ্যা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, অর্থনীতি, কৃষি, পরিবেশ
-
পর্যটন স্থান, বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব, স্থানীয় উৎসব ও খাদ্যসংস্কৃতি
-
তথ্যনির্ভর, নির্ভরযোগ্য ও আপডেটেড একটি পূর্ণাঙ্গ জাতীয় তথ্যভাণ্ডার
যোগাযোগ করুন
আপনার এলাকার তথ্য আপডেট বা সংশোধনের জন্য আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
আপনার অংশগ্রহণই আমাদের এই তথ্যভান্ডারকে সমৃদ্ধ করে তুলবে।
ধন্যবাদ!
আপনি এখন বাংলাদেশের প্রতিটি প্রান্ত জানার যাত্রায় আছেন – আমাদের সাথেই থাকুন!