বাংলাদেশের উপকূলীয় দ্বীপ ও বন্যা ব্যবস্থাপনার প্রবল কেন্দ্র
পটুয়াখালী জেলা বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে বরিশাল বিভাগের অন্তর্গত একটি উপকূলীয় জেলা। এটি মূলত নদী, খাল ও সাগরবেষ্টিত এলাকা হিসেবে পরিচিত। এখানকার সমুদ্র উপকূল, দ্বীপমালা ও কৃষিভিত্তিক জীবনধারা জেলা পরিচিতি এনে দিয়েছে। “দ্বীপের শহর” নামে খ্যাত পটুয়াখালী তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, কৃষি উৎপাদন এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
গঠনের ইতিহাস ও পটভূমি
-
১৮৬৭ সালে ব্রিটিশ শাসনামলে পটুয়াখালী মহকুমা প্রতিষ্ঠিত হয়।
-
১৯৬৯ সালে পটুয়াখালীকে পূর্ণাঙ্গ জেলা হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
-
পাকিস্তান আমলে এটি উপকূলীয় প্রতিরক্ষা অঞ্চল হিসেবে ব্যবহৃত হতো।
-
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধকালে পটুয়াখালী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
প্রশাসনিক তথ্য
বৈশিষ্ট্য | বিবরণ |
---|---|
জেলার নাম | পটুয়াখালী জেলা |
গঠনের বছর | ১৯৬৯ সাল |
জেলা সদর দপ্তর | পটুয়াখালী শহর |
উপজেলার সংখ্যা | ৮টি উপজেলা |
ইউনিয়ন পরিষদ | প্রায় ৭৩টি ইউনিয়ন |
মোট আয়তন | প্রায় ৩,২২১ বর্গকিলোমিটার |
মোট জনসংখ্যা (২০২৫) | প্রায় ১৮ লক্ষাধিক |
ধর্মীয় পরিসংখ্যান (আনুমানিক)
ধর্ম | জনসংখ্যার অনুপাত |
---|---|
ইসলাম | প্রায় ৯০% |
হিন্দুধর্ম | প্রায় ৯% |
অন্যান্য | প্রায় ১% |
প্রশাসনিক বিভাগসমূহ
পটুয়াখালী জেলার অন্তর্গত ৮টি উপজেলা:
-
পটুয়াখালী সদর উপজেলা
-
দুমকি উপজেলা
-
বাউফল উপজেলা
-
মির্জাগঞ্জ উপজেলা
-
গলাচিপা উপজেলা
-
কলাপাড়া উপজেলা
-
দশমিনা উপজেলা
-
রাঙ্গাবালী উপজেলা
স্থানীয় সরকার কাঠামো
-
জেলা প্রশাসক (DC) জেলার প্রধান প্রশাসনিক কর্মকর্তা।
-
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (UNO) উপজেলা পর্যায়ে দায়িত্ব পালন করেন।
-
ইউনিয়ন পরিষদ ও পৌরসভা কর্তৃক স্থানীয় শাসন পরিচালিত হয়।
নেতৃত্ব ও শাসনব্যবস্থা
-
বিভাগীয় কমিশনার বরিশাল বিভাগের শীর্ষ প্রশাসনিক কর্মকর্তা।
-
জেলা প্রশাসক: পটুয়াখালী জেলার প্রধান।
-
স্থানীয় পর্যায়ে: উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌর মেয়র।
আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা
-
পটুয়াখালী জেলা পুলিশ আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় দায়িত্বশীল।
-
উপকূলীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় বিশেষ ইউনিট সক্রিয়।
-
প্রতিটি উপজেলায় থানাসমূহ কার্যকর রয়েছে।
অর্থনীতি ও শিল্প
-
কৃষি: ধান, মাছ, লবণ ও শাকসবজি প্রধান উৎপাদিত পণ্য।
-
মৎস্য ও চিংড়ি চাষের বৃহৎ খামার
-
কলাপাড়া উপজেলায় পায়রা সমুদ্রবন্দর
-
সোনার চর ও দ্বীপাঞ্চলের পর্যটন ও কৃষিভিত্তিক সম্ভাবনা
শিক্ষা ও প্রতিষ্ঠান
-
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (PSTU): অন্যতম শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়
-
পটুয়াখালী সরকারি কলেজ ও অন্যান্য উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান
-
প্রচুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান
-
শিক্ষার হার (২০২৪): আনুমানিক ৭৪%
স্বাস্থ্য ব্যবস্থা
-
পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (স্থাপিত)
-
প্রতিটি উপজেলায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স
-
দুর্যোগ-সহনশীল স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও বিশেষায়িত হাসপাতাল
যোগাযোগ ও অবকাঠামো
-
সড়ক: পটুয়াখালী-কুয়াকাটা মহাসড়ক
-
নদীপথ: আভ্যন্তরীণ নৌ যোগাযোগ বিস্তৃত
-
সমুদ্রবন্দর: পায়রা সমুদ্রবন্দর (কলাপাড়া)
-
বিমান: পটুয়াখালী আঞ্চলিক বিমানবন্দর (উন্নয়নাধীন)
পর্যটন ও দর্শনীয় স্থান
-
কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকত: “সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখা যায়” এমন বিরল সমুদ্র সৈকত
-
ফাতরার চর, লালদিয়া চর: প্রাকৃতিক দ্বীপ
-
গলাচিপা ও দশমিনা নদীপথ সৌন্দর্য
-
কুয়াকাটায় রাখাইন সংস্কৃতির চিহ্নসমূহ
সংস্কৃতি ও জীবনধারা
-
মৎস্যজীবী ও কৃষিজীবী সম্প্রদায়ের জীবনধারা
-
খাবার: সমুদ্রের ইলিশ, চিংড়ি, নারিকেলভিত্তিক খাদ্য
-
উৎসব: রাখাইন সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী উৎসব
-
উপকূলীয় অঞ্চলের বন্যা ও দুর্যোগ সহনশীল জীবনযাত্রা
সারাংশ
পটুয়াখালী জেলা তার উপকূলীয় পরিবেশ, কৃষি-ভিত্তিক অর্থনীতি এবং সমুদ্রভিত্তিক পর্যটন সম্পদের জন্য বিখ্যাত। পায়রা সমুদ্রবন্দর এবং কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকতের কারণে জেলা অর্থনৈতিক ও পর্যটন বিকাশের সম্ভাবনাময় কেন্দ্র হয়ে উঠছে। দুর্যোগ-সহনশীল উন্নয়ন ও সংস্কৃতির বৈচিত্র্যে পটুয়াখালী বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল।
নিউজ ও আর্টিকেল
নিচের শিরোনামগুলোতে ক্লিক করে এই অংশ সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ নিবন্ধসমূহ পড়ুন:
আমাদের লক্ষ্য (ওয়েবসাইট ভিশন)
এই ওয়েবসাইটে আমরা তুলে ধরছি বাংলাদেশের প্রতিটি:
-
বিভাগ, জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন ও গ্রাম সংক্রান্ত তথ্য
-
ইতিহাস, জনসংখ্যা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, অর্থনীতি, কৃষি, পরিবেশ
-
পর্যটন স্থান, বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব, স্থানীয় উৎসব ও খাদ্যসংস্কৃতি
-
তথ্যনির্ভর, নির্ভরযোগ্য ও আপডেটেড একটি পূর্ণাঙ্গ জাতীয় তথ্যভাণ্ডার
যোগাযোগ করুন
আপনার এলাকার তথ্য আপডেট বা সংশোধনের জন্য আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
আপনার অংশগ্রহণই আমাদের এই তথ্যভান্ডারকে সমৃদ্ধ করে তুলবে।
ধন্যবাদ!
আপনি এখন বাংলাদেশের প্রতিটি প্রান্ত জানার যাত্রায় আছেন – আমাদের সাথেই থাকুন!