নদীপ্রবাহিত জনপদ, কৃষি ঐতিহ্য ও মানবিক সংগ্রামের প্রতিচ্ছবি
শরীয়তপুর জেলা বাংলাদেশের দক্ষিণ মধ্যাঞ্চলে অবস্থিত একটি নদীবিধৌত জনপদ। মেঘনা, পদ্মা ও আড়িয়াল খাঁ নদী দ্বারা পরিবেষ্টিত এ জেলা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, কৃষি উৎপাদন এবং মুক্তিযুদ্ধের বীরত্বপূর্ণ ইতিহাসে সমৃদ্ধ। একসময় বৃহত্তর ফরিদপুর জেলার অংশ শরীয়তপুর এখন দেশের দক্ষিণাঞ্চলের যোগাযোগ ও কৃষি অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র।
গঠনের ইতিহাস ও পটভূমি
-
সুফি সাধক হাজী শরীয়তুল্লাহর নামানুসারে এ জেলার নামকরণ হয়।
-
মুসলিম সমাজ সংস্কারের ফারায়েযি আন্দোলনের কেন্দ্রস্থল ছিল এই অঞ্চল।
-
১৯৮৪ সালে ফরিদপুর জেলা বিভক্ত হয়ে শরীয়তপুর জেলা প্রতিষ্ঠিত হয়।
-
মহান মুক্তিযুদ্ধে শরীয়তপুরের ভূমিকা ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও গৌরবোজ্জ্বল।
প্রশাসনিক তথ্য
বৈশিষ্ট্য | বিবরণ |
---|---|
জেলার নাম | শরীয়তপুর জেলা |
সদর দপ্তর | শরীয়তপুর শহর |
প্রতিষ্ঠার সাল | ১৯৮৪ সাল |
মোট আয়তন | প্রায় ১,১৮১ বর্গকিলোমিটার |
মোট জনসংখ্যা (২০২৫) | প্রায় ১৫ লক্ষের অধিক |
উপজেলার সংখ্যা | ৬টি উপজেলা |
পৌরসভা | ৬টি পৌরসভা |
ধর্মীয় পরিসংখ্যান (আনুমানিক)
ধর্ম | জনসংখ্যার অনুপাত |
---|---|
ইসলাম | প্রায় ৯২ ভাগ |
হিন্দুধর্ম | প্রায় ৭ ভাগ |
অন্যান্য | প্রায় ১ ভাগ |
উপজেলা ও প্রশাসনিক কাঠামো
শরীয়তপুর জেলার উপজেলার তালিকা:
স্থানীয় সরকার কাঠামো
-
জেলা প্রশাসক জেলার শীর্ষ প্রশাসনিক কর্মকর্তা।
-
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাগণ প্রতিটি উপজেলায় প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনা করেন।
-
ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা ও উপজেলা পরিষদের মাধ্যমে স্থানীয় শাসনব্যবস্থা কার্যকর।
-
জনগণের অংশগ্রহণে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা প্রশাসনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
নেতৃত্ব ও শাসনব্যবস্থা
-
জেলা প্রশাসক জেলা পর্যায়ে সরকারের প্রধান প্রতিনিধি।
-
উপজেলা চেয়ারম্যান ও পৌর মেয়রগণ স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার নেতৃত্ব প্রদান করেন।
-
আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ, আনসার বাহিনী ও অন্যান্য নিরাপত্তা সংস্থা নিয়োজিত রয়েছে।
আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা
-
প্রতিটি উপজেলায় থানার মাধ্যমে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়।
-
নদীপথে নৌপুলিশের মাধ্যমে টহল ও নজরদারি পরিচালিত হয়।
-
দুর্যোগপূর্ণ সময়ে উদ্ধার কার্যক্রম ও নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা জোরদার করা হয়।
অর্থনীতি ও শিল্প
-
প্রধান অর্থনৈতিক খাত:
-
কৃষি: ধান, পাট, গম, সবজি উৎপাদন
-
নদী ও জলাশয়ভিত্তিক মৎস্যচাষ
-
গবাদিপশু পালন ও দুগ্ধ উৎপাদন
-
ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প উদ্যোগ
-
-
মেঘনা ও পদ্মা নদীর অববাহিকায় মাছ চাষ ও নদীবাণিজ্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
শিক্ষা ও প্রতিষ্ঠান
-
শরীয়তপুর সরকারি কলেজ
-
নড়িয়া সরকারি কলেজ
-
ভেদরগঞ্জ সরকারি কলেজ
-
জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে মাধ্যমিক ও প্রাথমিক শিক্ষা বিস্তৃত
-
কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষার প্রসার ঘটেছে
স্বাস্থ্য ব্যবস্থা
-
শরীয়তপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেলা সদর হাসপাতাল
-
প্রতিটি উপজেলায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স
-
গ্রামীণ এলাকায় কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা প্রদান
-
মা ও শিশু স্বাস্থ্য উন্নয়নে সরকারি ও বেসরকারি সহযোগিতায় বিশেষ কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে
যোগাযোগ ও অবকাঠামো
-
পদ্মা সেতু প্রকল্পের মাধ্যমে শরীয়তপুর এখন ঢাকা ও দেশের অন্যান্য অঞ্চলের সাথে সরাসরি সংযুক্ত হয়েছে
-
সড়কপথে ঢাকা-মাদারীপুর-ভাঙ্গা-মাওয়া সংযোগ উন্নত হয়েছে
-
নদীপথে পণ্য ও যাত্রী পরিবহন প্রচলিত
-
নতুন সেতু ও অভ্যন্তরীণ সড়ক অবকাঠামো উন্নয়ন চলছে
পর্যটন ও দর্শনীয় স্থান
-
হাজী শরীয়তুল্লাহ (রহঃ) এর মাজার
-
পদ্মা নদীর পাড়ে সৌন্দর্য উপভোগ
-
গোসাইরহাটের ঐতিহাসিক জমিদার বাড়ি
-
নড়িয়া শহরের পুরাতন মসজিদ ও স্থাপত্য
-
গ্রামীণ মেলা ও পল্লী সংস্কৃতির নানান রূপ
সংস্কৃতি ও জীবনধারা
-
নদীবেষ্টিত জীবনধারা ও কৃষিভিত্তিক জনজীবন
-
খাদ্য: দেশীয় মাছ, পাটালি গুড়, গ্রামীণ পিঠা
-
সাহিত্য, সংগীত ও লোকনাট্যের চর্চা
-
পল্লী মেলা, বৈশাখী উৎসব, ঈদ ও দুর্গাপূজার রঙিন আয়োজন
-
গ্রামবাংলার চিরচেনা সংস্কৃতির প্রাণবন্ত প্রকাশ
সারাংশ
শরীয়তপুর জেলা নদী, কৃষি, মানবিক ঐতিহ্য এবং মুক্তিযুদ্ধের গৌরবময় ইতিহাসের সম্মিলিত রূপ। দেশের দক্ষিণাঞ্চলের একটি সম্ভাবনাময় জেলা হিসেবে শরীয়তপুর তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও মানবিক শক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশের সার্বিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।
নিউজ ও আর্টিকেল
নিচের শিরোনামগুলোতে ক্লিক করে এই অংশ সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ নিবন্ধসমূহ পড়ুন:
আমাদের লক্ষ্য (ওয়েবসাইট ভিশন)
এই ওয়েবসাইটে আমরা তুলে ধরছি বাংলাদেশের প্রতিটি:
-
বিভাগ, জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন ও গ্রাম সংক্রান্ত তথ্য
-
ইতিহাস, জনসংখ্যা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, অর্থনীতি, কৃষি, পরিবেশ
-
পর্যটন স্থান, বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব, স্থানীয় উৎসব ও খাদ্যসংস্কৃতি
-
তথ্যনির্ভর, নির্ভরযোগ্য ও আপডেটেড একটি পূর্ণাঙ্গ জাতীয় তথ্যভাণ্ডার
যোগাযোগ করুন
আপনার এলাকার তথ্য আপডেট বা সংশোধনের জন্য আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
আপনার অংশগ্রহণই আমাদের এই তথ্যভান্ডারকে সমৃদ্ধ করে তুলবে।
ধন্যবাদ!
আপনি এখন বাংলাদেশের প্রতিটি প্রান্ত জানার যাত্রায় আছেন – আমাদের সাথেই থাকুন!