বাংলাদেশের রাজধানী ও সর্ববৃহৎ মহানগর এলাকা
ঢাকা মহানগর বাংলাদেশের রাজধানী এবং প্রধান প্রশাসনিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। দেশের সর্ববৃহৎ শহর হিসেবে এটি আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও বিশেষভাবে পরিচিত। পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা নদীর সংযোগস্থলের কাছে অবস্থিত এই মহানগর, বাংলাদেশের আধুনিক নগরায়ণ, ব্যবসা-বাণিজ্য, প্রযুক্তি ও ইতিহাসের কেন্দ্রবিন্দু।
গঠনের ইতিহাস ও পটভূমি
-
সপ্তম শতকে প্রাচীন “ঢাকা” অঞ্চলে নগরায়ণের সূত্রপাত।
-
১৬১০ সালে মুঘল শাসক ইসলাম খান চিশতী ঢাকা শহরকে বাংলার রাজধানী ঘোষণা করেন।
-
ব্রিটিশ আমলে ঢাকা ছিল পূর্ব বাংলার একটি গুরুত্বপূর্ণ শহর।
-
১৯৪৭ সালে পাকিস্তান সৃষ্টির পরে ঢাকা পূর্ব পাকিস্তানের রাজধানী হয়।
-
১৯৭১ সালে স্বাধীনতার পর ঢাকা বাংলাদেশের রাজধানী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়।
প্রশাসনিক তথ্য
বৈশিষ্ট্য | বিবরণ |
---|---|
শহরের নাম | ঢাকা মহানগর |
গঠনের বছর | আনুষ্ঠানিকভাবে ১৬১০ সাল |
প্রশাসনিক কাঠামো | ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন |
মোট এলাকা | আনুমানিক ৩০৬ বর্গকিলোমিটার |
মোট জনসংখ্যা (২০২৫) | আনুমানিক ১ কোটি ২০ লাখের বেশি |
ধর্মীয় পরিসংখ্যান (আনুমানিক)
ধর্ম | জনসংখ্যার অনুপাত |
---|---|
ইসলাম | প্রায় ৯০% |
হিন্দুধর্ম | প্রায় ৮% |
অন্যান্য | প্রায় ২% |
প্রশাসনিক বিভাগসমূহ
ঢাকা মহানগর মূলত দুইটি সিটি কর্পোরেশন দ্বারা পরিচালিত:
প্রতিটি সিটি কর্পোরেশন বিভক্ত:
স্থানীয় সরকার কাঠামো
-
নির্বাচিত মেয়র ও ওয়ার্ড কাউন্সিলর দ্বারা পরিচালিত।
-
প্রতিটি ওয়ার্ডে ওয়ার্ড কাউন্সিলর এবং সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর নিযুক্ত।
-
নগর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (RAJUK) নগর পরিকল্পনার দায়িত্বে।
-
সিটি কর্পোরেশন নিজস্ব পরিচ্ছন্নতা, ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, স্বাস্থ্যসেবা ও নগরসজ্জার দায়িত্ব পালন করে।
নেতৃত্ব ও শাসনব্যবস্থা
-
ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচিত মেয়রগণ নগর পরিচালনার শীর্ষ ব্যক্তিত্ব।
-
ঢাকা মহানগর প্রশাসন সরাসরি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন।
-
জাতীয় প্রশাসনিক কার্যক্রমে ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকাকে বিভক্ত করা হয়েছে।
আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা
-
ঢাকা মহানগর পুলিশ (DMP) মহানগর জুড়ে আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখে।
-
স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স (SSF) রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করে।
-
র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (RAB) সন্ত্রাসবিরোধী কার্যক্রমে জড়িত।
-
প্রতিটি থানায় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (OC) নেতৃত্ব দেন।
অর্থনীতি ও শিল্প
-
বাংলাদেশ ব্যাংক, স্টক এক্সচেঞ্জসহ আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহের প্রধান কার্যালয়।
-
পোশাক শিল্প, তথ্যপ্রযুক্তি, নির্মাণ, টেলিযোগাযোগ ও সেবা খাতের কেন্দ্র।
-
কারওয়ান বাজার, মতিঝিল, বনানী, গুলশান বাণিজ্যিক এলাকা।
-
আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা, প্রযুক্তি মেলা এবং শিল্পমেলার আয়োজনের কেন্দ্র।
শিক্ষা ও প্রতিষ্ঠান
-
শীর্ষস্থানীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েট, নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি, আইবিএ
-
শতাধিক স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়
-
বৃহৎ মেডিকেল কলেজ ও ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ
-
শিক্ষার হার (২০২৪): আনুমানিক ৮৮%
স্বাস্থ্য ব্যবস্থা
-
ঢাকা মেডিকেল কলেজ, বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়
-
শহরব্যাপী অসংখ্য বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিক
-
ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও ওয়ার্ড স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্র
-
আধুনিক স্বাস্থ্য সুবিধা ও ই-হেলথ সেবা সম্প্রসারিত
যোগাযোগ ও অবকাঠামো
-
সড়ক: মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, বাস র্যাপিড ট্রানজিট
-
রেল: কমলাপুর রেলস্টেশন
-
বিমান: হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর
-
নদীপথ: সদরঘাট নৌবন্দর
-
চলমান প্রকল্প: ঢাকা সাবওয়ে প্রকল্প, মেট্রোরেল এক্সটেনশন
পর্যটন ও দর্শনীয় স্থান
-
ঐতিহাসিক: লালবাগ কেল্লা, আহসান মঞ্জিল, জাতীয় জাদুঘর
-
আধুনিক: জাতীয় সংসদ ভবন, হাতিরঝিল
-
ধর্মীয়: বায়তুল মোকাররম মসজিদ, ঢাকেশ্বরী মন্দির
-
বিনোদন: রমনা পার্ক, চিড়িয়াখানা, ফ্যান্টাসি কিংডম (নিকটবর্তী)
সংস্কৃতি ও জীবনধারা
-
শহুরে ও বহুজাতিক সংস্কৃতির মিশ্রণ
-
খাদ্য: পুরান ঢাকার বিরিয়ানি, কাচ্চি, বাখরখানি
-
পোশাক ও ফ্যাশন: জামদানি শাড়ি, আধুনিক পোশাক বাজার
-
ফেস্টিভ্যাল: বইমেলা, ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল, বৈশাখী উৎসব
সারাংশ
ঢাকা মহানগর শুধুমাত্র বাংলাদেশের রাজধানীই নয়, এটি দেশের হৃদস্পন্দন। প্রশাসন, অর্থনীতি, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা এবং সংস্কৃতির প্রতিটি ক্ষেত্রে ঢাকা মহানগরের প্রভাব গভীর ও বিস্তৃত। এই নগরীর গতিশীলতা, উদ্ভাবন ও বহুমাত্রিক জীবনধারা বাংলাদেশের সার্বিক অগ্রগতিতে বিরাট অবদান রাখছে।
নিউজ ও আর্টিকেল
নিচের শিরোনামগুলোতে ক্লিক করে এই অংশ সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ নিবন্ধসমূহ পড়ুন:
আমাদের লক্ষ্য (ওয়েবসাইট ভিশন)
এই ওয়েবসাইটে আমরা তুলে ধরছি বাংলাদেশের প্রতিটি:
-
বিভাগ, জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন ও গ্রাম সংক্রান্ত তথ্য
-
ইতিহাস, জনসংখ্যা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, অর্থনীতি, কৃষি, পরিবেশ
-
পর্যটন স্থান, বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব, স্থানীয় উৎসব ও খাদ্যসংস্কৃতি
-
তথ্যনির্ভর, নির্ভরযোগ্য ও আপডেটেড একটি পূর্ণাঙ্গ জাতীয় তথ্যভাণ্ডার
যোগাযোগ করুন
আপনার এলাকার তথ্য আপডেট বা সংশোধনের জন্য আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
আপনার অংশগ্রহণই আমাদের এই তথ্যভান্ডারকে সমৃদ্ধ করে তুলবে।
ধন্যবাদ!
আপনি এখন বাংলাদেশের প্রতিটি প্রান্ত জানার যাত্রায় আছেন – আমাদের সাথেই থাকুন!