ঐতিহ্য, শিক্ষা ও প্রশাসনিক গুরুত্বে সমৃদ্ধ শহরকেন্দ্রিক জনপদ
টাঙ্গাইল সদর উপজেলা টাঙ্গাইল জেলার প্রশাসনিক কেন্দ্র ও সবচেয়ে জনবহুল উপজেলা। এটি শিক্ষা, সংস্কৃতি, স্বাস্থ্যসেবা ও আধুনিক নগরায়নের এক প্রাণকেন্দ্র। বৃহত্তর টাঙ্গাইলের সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের মূল কেন্দ্রস্থল এই সদর উপজেলা।
গঠনের ইতিহাস ও পটভূমি
-
ব্রিটিশ আমলে টাঙ্গাইল ছিল নদীবন্দর ও কৃষিভিত্তিক হাটবাজার এলাকা।
-
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
-
১৯৮৩ সালে টাঙ্গাইল জেলার সদর উপজেলা হিসেবে প্রতিষ্ঠা পায়।
-
ঐতিহাসিক ভাওয়াল, কাগমারি ও দেলদুয়ার অঞ্চলের সংমিশ্রণে সমৃদ্ধ জনপদ।
প্রশাসনিক তথ্য
বৈশিষ্ট্য | বিবরণ |
---|---|
উপজেলার নাম | টাঙ্গাইল সদর উপজেলা |
গঠনের বছর | ১৯৮৩ সাল |
উপজেলা সদর | টাঙ্গাইল শহর |
ইউনিয়ন পরিষদের সংখ্যা | ১২টি ইউনিয়ন |
পৌরসভা | টাঙ্গাইল পৌরসভা (১৮টি ওয়ার্ড) |
মোট আয়তন | প্রায় ৩৪১.৫২ বর্গকিলোমিটার |
মোট জনসংখ্যা (২০২৫) | প্রায় ৬ লক্ষাধিক |
ধর্মীয় পরিসংখ্যান (আনুমানিক)
ধর্ম | জনসংখ্যার অনুপাত |
---|---|
ইসলাম | প্রায় ৯০% |
হিন্দুধর্ম | প্রায় ৮% |
অন্যান্য | প্রায় ২% |
প্রশাসনিক বিভাগসমূহ
টাঙ্গাইল সদর উপজেলা গঠিত ১২টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা নিয়ে।
এখানে একটি প্রধান থানা রয়েছে:
ইউনিয়নসমূহ:
-
দাইন্যা ইউনিয়ন
-
হুগড়া ইউনিয়ন
-
মাহমুদনগর ইউনিয়ন
-
ঘারিন্দা ইউনিয়ন
-
কাতুলী ইউনিয়ন
-
কাকুয়া ইউনিয়ন
-
কোদালিয়া ইউনিয়ন
-
গালা ইউনিয়ন
-
পাইনশাল ইউনিয়ন
-
ধনবাড়ী ইউনিয়ন (আংশিক অন্তর্ভুক্তি)
-
রানাপাড়া ইউনিয়ন
-
করটিয়া ইউনিয়ন
পৌরসভা:
-
টাঙ্গাইল পৌরসভা (১৮টি ওয়ার্ড)
থানা:
-
টাঙ্গাইল সদর থানা
স্থানীয় সরকার কাঠামো
-
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (UNO) উপজেলা প্রশাসনের প্রধান।
-
ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানগণ গ্রামীণ প্রশাসন পরিচালনা করেন।
-
পৌর মেয়র ও ওয়ার্ড কাউন্সিলরগণ শহর এলাকায় দায়িত্ব পালন করেন।
আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা
-
টাঙ্গাইল সদর থানা ও পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় দায়িত্বে রয়েছেন।
-
ট্রাফিক পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও র্যাব টহল সক্রিয় রয়েছে।
-
সিসিটিভি নিয়ন্ত্রণ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও নাগরিক নিরাপত্তা ইউনিট সক্রিয়।
অর্থনীতি ও শিল্প
-
ব্যবসা ও বাণিজ্য, তাঁত শিল্প, কৃষি ও ছোট আকারের কারখানা সমৃদ্ধ।
-
শহরের বাজার, কাঁচাবাজার, গার্মেন্টস ও ফার্নিচার দোকানের সমাহার।
-
কৃষিজ পণ্য: ধান, গম, আলু, সবজি, মাছ ও ডেইরি খাত সমৃদ্ধ।
-
টাঙ্গাইলের বিখ্যাত “টাঙ্গাইলের শাড়ি” উৎপাদনে এ অঞ্চল মুখ্য।
শিক্ষা ও প্রতিষ্ঠান
-
মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, টাঙ্গাইল সরকারি সাদত কলেজ।
-
কারিগরি, মাধ্যমিক ও ইংরেজি মাধ্যম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে।
-
শিক্ষার হার (২০২৪): আনুমানিক ৮৬%
স্বাস্থ্য ব্যবস্থা
-
২৫০ শয্যাবিশিষ্ট টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতাল।
-
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র ও ক্লিনিক।
-
বেসরকারি হাসপাতাল, ডেন্টাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের প্রসার।
যোগাযোগ ও অবকাঠামো
-
ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক সংযুক্ত।
-
শহরাঞ্চলে আধুনিক রোড নেটওয়ার্ক, ফ্লাইওভার, বাস টার্মিনাল বিদ্যমান।
-
রেলস্টেশন (টাঙ্গাইল রেলওয়ে স্টেশন), টেম্পু-বাস-সিএনজি ও রাইড শেয়ার সহজলভ্য।
পর্যটন ও দর্শনীয় স্থান
-
কাগমারি সম্মেলনস্থল, দেলদুয়ার জমিদার বাড়ি, করটিয়া কলেজ ও শহীদ মিনার।
-
শহরের বিভিন্ন পার্ক, শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ, লাইব্রেরি ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র।
-
ব্রহ্মপুত্র নদীর তীরবর্তী প্রাকৃতিক সৌন্দর্য।
সংস্কৃতি ও জীবনধারা
-
শহরের আধুনিক জীবনধারা ও গ্রামীণ ঐতিহ্যের সংমিশ্রণ।
-
খাদ্য: টাঙ্গাইলের চমচম, পুলি-পিঠা, নদীর মাছ ও দেশি খাবার।
-
সাংস্কৃতিক উৎসব: বইমেলা, নাট্যচর্চা, কবিতা উৎসব, বৈশাখী মেলা।
সারাংশ
টাঙ্গাইল সদর উপজেলা শুধু টাঙ্গাইল জেলার প্রশাসনিক কেন্দ্র নয়, বরং শিক্ষা, ব্যবসা, স্বাস্থ্য ও সংস্কৃতিতে সমৃদ্ধ একটি শহরকেন্দ্রিক উপজেলা। গ্রামীণ ঐতিহ্য ও আধুনিক শহুরে সুবিধার মেলবন্ধনে এটি একটি বাসযোগ্য ও সম্ভাবনাময় নগর জনপদ।
নিউজ ও আর্টিকেল
নিচের শিরোনামগুলোতে ক্লিক করে এই অংশ সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ নিবন্ধসমূহ পড়ুন:
আমাদের লক্ষ্য (ওয়েবসাইট ভিশন)
এই ওয়েবসাইটে আমরা তুলে ধরছি বাংলাদেশের প্রতিটি:
-
বিভাগ, জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন ও গ্রাম সংক্রান্ত তথ্য
-
ইতিহাস, জনসংখ্যা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, অর্থনীতি, কৃষি, পরিবেশ
-
পর্যটন স্থান, বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব, স্থানীয় উৎসব ও খাদ্যসংস্কৃতি
-
তথ্যনির্ভর, নির্ভরযোগ্য ও আপডেটেড একটি পূর্ণাঙ্গ জাতীয় তথ্যভাণ্ডার
যোগাযোগ করুন
আপনার এলাকার তথ্য আপডেট বা সংশোধনের জন্য আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
আপনার অংশগ্রহণই আমাদের এই তথ্যভান্ডারকে সমৃদ্ধ করে তুলবে।
ধন্যবাদ!
আপনি এখন বাংলাদেশের প্রতিটি প্রান্ত জানার যাত্রায় আছেন – আমাদের সাথেই থাকুন!