বাংলাদেশের সাহিত্য, সংস্কৃতি ও শিল্পবিপ্লবের প্রাণকেন্দ্র
কুষ্টিয়া জেলা বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের একটি সাংস্কৃতিক, শিল্প ও কৃষিবহুল সমৃদ্ধ জেলা। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিবিজড়িত শিলাইদহ কুঠিবাড়ি এবং বাউল সম্রাট লালন শাহের আখড়াবাড়ি এই জেলার গৌরব। আধুনিক শিল্প, শিক্ষা, সাহিত্য ও কৃষিতে কুষ্টিয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে।
গঠনের ইতিহাস ও পটভূমি
-
ব্রিটিশ আমলে কুষ্টিয়া নদী ও রেলপথের জন্য গুরুত্বপূর্ণ যোগাযোগ কেন্দ্র হয়ে ওঠে।
-
১৮৬০ সালের দিকে নদীপথের উন্নয়নের সাথে সাথে কুষ্টিয়া শহরের উন্নতি শুরু হয়।
-
১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের পর কুষ্টিয়া শহর একটি স্বতন্ত্র প্রশাসনিক কেন্দ্র হয়।
-
১৯৮৪ সালে কুষ্টিয়া জেলা হিসেবে পূর্ণ মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত হয়।
প্রশাসনিক তথ্য
বৈশিষ্ট্য | বিবরণ |
---|---|
জেলার নাম | কুষ্টিয়া জেলা |
গঠনের বছর | আনুষ্ঠানিকভাবে ১৯৮৪ সাল |
জেলা সদর দপ্তর | কুষ্টিয়া শহর |
উপজেলার সংখ্যা | ৬টি উপজেলা |
ইউনিয়ন পরিষদ | প্রায় ৭০টি ইউনিয়ন |
মোট আয়তন | আনুমানিক ১,৬২১ বর্গকিলোমিটার |
মোট জনসংখ্যা (২০২৫) | প্রায় ২৫ লক্ষাধিক |
ধর্মীয় পরিসংখ্যান (আনুমানিক)
ধর্ম | জনসংখ্যার অনুপাত |
---|---|
ইসলাম | প্রায় ৮৯% |
হিন্দুধর্ম | প্রায় ১০% |
অন্যান্য | প্রায় ১% |
প্রশাসনিক বিভাগসমূহ
কুষ্টিয়া জেলার অন্তর্গত ৬টি উপজেলা:
-
কুষ্টিয়া সদর উপজেলা
-
খোকসা উপজেলা
-
কুমারখালী উপজেলা
-
মিরপুর উপজেলা
-
দৌলতপুর উপজেলা
-
ভেড়ামারা উপজেলা
স্থানীয় সরকার কাঠামো
-
জেলা প্রশাসক (DC) জেলার প্রধান প্রশাসনিক কর্মকর্তা।
-
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (UNO) উপজেলা পর্যায়ে দায়িত্ব পালন করেন।
-
ইউনিয়ন পরিষদ ও পৌরসভায় নির্বাচিত জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে স্থানীয় শাসন পরিচালিত হয়।
নেতৃত্ব ও শাসনব্যবস্থা
-
বিভাগীয় কমিশনার: খুলনা বিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তা।
-
জেলা প্রশাসক: কুষ্টিয়া জেলার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা।
-
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌর মেয়রগণ স্থানীয় প্রশাসন পরিচালনা করেন।
আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা
-
প্রতিটি উপজেলায় থানা এবং ফাঁড়ি বিদ্যমান।
-
পুলিশ, র্যাব এবং স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সক্রিয় রয়েছে।
-
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণে বিশেষ উদ্যোগ কার্যকর রয়েছে।
অর্থনীতি ও শিল্প
-
কৃষি: ধান, পাট, গম, আখ ও সবজি উৎপাদন।
-
চিনি শিল্প: কুষ্টিয়া সুগার মিলস দেশের অন্যতম পুরাতন চিনি কারখানা।
-
কুমারখালী ও খোকসার তাঁত শিল্প ও তাঁতের শাড়ি উৎপাদন প্রসিদ্ধ।
-
মৎসচাষ ও পশুপালনও অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
শিক্ষা ও প্রতিষ্ঠান
-
কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ সীমান্তে অবস্থিত)।
-
মাধ্যমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বিস্তৃত নেটওয়ার্ক।
-
শিক্ষার হার (২০২৪): আনুমানিক ৮১%
স্বাস্থ্য ব্যবস্থা
-
কুষ্টিয়া ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল: জেলার প্রধান স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র।
-
প্রতিটি উপজেলায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।
-
আধুনিক বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকের দ্রুত সম্প্রসারণ ঘটেছে।
যোগাযোগ ও অবকাঠামো
-
সড়ক: কুষ্টিয়া-ঢাকা মহাসড়ক, কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়ক।
-
রেল: কুষ্টিয়া রেলওয়ে স্টেশন থেকে আন্তঃনগর ট্রেন যোগাযোগ।
-
নদীপথ: গড়াই ও পদ্মা নদী সংলগ্ন অভ্যন্তরীণ নৌযোগাযোগ।
পর্যটন ও দর্শনীয় স্থান
-
ঐতিহাসিক: শিলাইদহ কুঠিবাড়ি (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতি বিজড়িত স্থান)।
-
ধর্মীয়: লালন শাহের আখড়াবাড়ি।
-
প্রাকৃতিক: পদ্মা ও গড়াই নদীর পাড়ের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য।
-
সাংস্কৃতিক: লালন উৎসব, রবীন্দ্র জন্মোৎসব।
সংস্কৃতি ও জীবনধারা
-
খাদ্য: দেশীয় ভাত, ইলিশ, পাটশাক ও স্থানীয় উৎপাদিত শাকসবজি।
-
পোশাক: তাঁতের শাড়ি ও দেশীয় কাপড়।
-
শিল্প ও সংস্কৃতি: বাউল গান, রবীন্দ্র সংগীত, নাট্যচর্চা ও কবিতা।
-
ক্রীড়া: ফুটবল ও কাবাডি অত্যন্ত জনপ্রিয়।
সারাংশ
কুষ্টিয়া জেলা তার সাহিত্যিক ঐতিহ্য, সাংস্কৃতিক গৌরব এবং কৃষিভিত্তিক অর্থনীতির জন্য বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ একটি অঞ্চল। শিল্প, সংস্কৃতি, শিক্ষা ও কৃষিতে এই জেলার অবদান দেশের সামগ্রিক উন্নয়নে এক অনন্য ভূমিকা রাখছে।
নিউজ ও আর্টিকেল
নিচের শিরোনামগুলোতে ক্লিক করে এই অংশ সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ নিবন্ধসমূহ পড়ুন:
আমাদের লক্ষ্য (ওয়েবসাইট ভিশন)
এই ওয়েবসাইটে আমরা তুলে ধরছি বাংলাদেশের প্রতিটি:
-
বিভাগ, জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন ও গ্রাম সংক্রান্ত তথ্য
-
ইতিহাস, জনসংখ্যা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, অর্থনীতি, কৃষি, পরিবেশ
-
পর্যটন স্থান, বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব, স্থানীয় উৎসব ও খাদ্যসংস্কৃতি
-
তথ্যনির্ভর, নির্ভরযোগ্য ও আপডেটেড একটি পূর্ণাঙ্গ জাতীয় তথ্যভাণ্ডার
যোগাযোগ করুন
আপনার এলাকার তথ্য আপডেট বা সংশোধনের জন্য আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
আপনার অংশগ্রহণই আমাদের এই তথ্যভান্ডারকে সমৃদ্ধ করে তুলবে।
ধন্যবাদ!
আপনি এখন বাংলাদেশের প্রতিটি প্রান্ত জানার যাত্রায় আছেন – আমাদের সাথেই থাকুন!