আকিকা ইসলামে সুন্নতে মোয়াক্কাদা, অর্থাৎ এটি করা উত্তম তবে বাধ্যতামূলক নয়। অন্যদিকে, ঋণ নেওয়া বা কারো কাছে ধার করা ইসলামে গুরুতর বিষয়। তাই যদি কেউ ঋণগ্রস্ত হয়, তবে তার জন্য প্রথমে সেই ঋণ পরিশোধ করাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ।


ঋণ নিয়ে আকিকা করা কি উচিত?

🔹 যদি ঋণ নেওয়ার পরিমাণ বেশি হয়:
যদি কারো ওপর বড় অঙ্কের ঋণ থাকে এবং সে ঋণ শোধ করতে হিমশিম খাচ্ছে, তাহলে তার জন্য আকিকা না করাই উত্তম। কারণ, ইসলামে নিজের ক্ষমতার বাইরে গিয়ে কোনো সুন্নত আমল করা জরুরি নয়

🔹 যদি সামান্য ঋণ থাকে এবং পরিশোধ করা সহজ হয়:
যদি ঋণের পরিমাণ কম হয় এবং সেটি স্বাভাবিকভাবে শোধ করা যায়, তাহলে আকিকা করা যেতে পারে। তবে ঋণগ্রস্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকলে ঋণ শোধ করাই প্রাধান্য দেওয়া উচিত


হাদিস অনুযায়ী করণীয়

📖 রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন:
“সর্বোত্তম সাদকা হলো তা, যা নিজের প্রয়োজন মিটিয়ে দেওয়া হয়।”
📚 (বুখারি, ৪৩৯৬)

📖 অন্য এক হাদিসে আছে:
“এক ব্যক্তি রাসুল (সা.)-কে জিজ্ঞাসা করলেন, আমি কি ঋণ নিয়ে সাদকা করব? রাসুল (সা.) বললেন, না।”
📚 (ইবনে মাজাহ, ২৪৩৩)

এখানে বোঝা যায়, ইসলাম কখনো ঋণ নিয়ে কোনো নফল বা সুন্নত আমল করতে উৎসাহিত করে না। বরং সামর্থ্যবান হলে করাই উত্তম।


সমাধান ও পরামর্শ

সামর্থ্যবান হলে আকিকা করুন।
যদি ঋণগ্রস্ত হন, তবে ঋণ পরিশোধ করা বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
আকিকার বিকল্প হিসেবে দোয়া ও সদকা করতে পারেন।
যদি পরবর্তীতে সামর্থ্য আসে, তখন আকিকা করা যায়।


শেষ কথা

আকিকা একটি ভালো আমল, তবে ঋণ করে করা উচিত নয়। ইসলাম কখনো এমন কিছু করতে উৎসাহিত করে না যা অর্থনৈতিক চাপ সৃষ্টি করে। তাই ঋণগ্রস্ত হলে, আগে ঋণ শোধ করুন, পরে সামর্থ্য হলে আকিকা করুন। আল্লাহ নিয়তের ওপর বেশি গুরুত্ব দেন—তাই কেবল অর্থের জন্য চিন্তিত না হয়ে শিশুর জন্য দোয়া করুন, ইনশাআল্লাহ তাতেও বরকত আসবে।