ভূমিকা কৈলাস পর্বত, তিব্বতের এক মহিমান্বিত পর্বতশৃঙ্গ, যার উচ্চতা প্রায় ৬,৬৫৬ মিটার (২১,৭৭৮ ফুট)। এটি বিশ্বের অন্যতম রহস্যময় পর্বত এবং হিন্দু, বৌদ্ধ, জৈন ও বন ধর্মের অনুসারীদের কাছে অত্যন্ত পবিত্র স্থান হিসেবে বিবেচিত। তিব্বতের প্রত্যন্ত অঞ্চলে অবস্থিত এই পর্বত ও মানস সরোবর হ্রদ প্রতি বছর হাজার হাজার তীর্থযাত্রী ও অভিযাত্রীদের আকর্ষণ করে।
কৈলাস পর্বতের ধর্মীয় গুরুত্ব
১. হিন্দু ধর্মে: কৈলাস পর্বতকে ভগবান শিবের বাসস্থান হিসেবে মনে করা হয়। এটি কৈলাস মান্দার পর্বত নামে পরিচিত এবং হিন্দু ধর্মে মোক্ষ লাভের প্রতীক। শিবভক্তরা বিশ্বাস করেন, এই পবিত্র স্থানে একবার পরিক্রমা করলে পাপমুক্ত হওয়া যায়।
- বৌদ্ধ ধর্মে: বৌদ্ধরা কৈলাস পর্বতকে ‘কাং রিনপোচে’ বলে অভিহিত করে, যা ‘মূল্যবান তুষার শৃঙ্গ’ বোঝায়। তারা বিশ্বাস করেন, এই পর্বত সমগ্র বিশ্বজগতের কেন্দ্র এবং এটি বৌদ্ধ ধর্মের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্থান।
- জৈন ধর্মে: জৈনদের মতে, কৈলাস পর্বত হল প্রথম তীর্থঙ্কর ঋষভদেবের নির্জীব মোক্ষলাভের স্থান। তাই এটি জৈনদের জন্য এক পবিত্র তীর্থ।
- বন ধর্মে: তিব্বতের আদিবাসী বন ধর্মের অনুসারীরা কৈলাস পর্বতকে দেবতা ডেমচকের বাসস্থান বলে মনে করেন, যিনি ধ্যান ও আধ্যাত্মিক শক্তির প্রতীক।
কৈলাস পর্বতের রহস্য ও বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ কৈলাস পর্বত নিয়ে বহু রহস্য ও বৈজ্ঞানিক গবেষণা রয়েছে। কিছু গবেষক মনে করেন, এটি পৃথিবীর শক্তি চক্রের (energy vortex) একটি কেন্দ্র। বিশেষজ্ঞদের মতে, পর্বতের চারপাশের চুম্বকীয় শক্তি এতটাই প্রবল যে, এটি সময়ের প্রবাহকেও প্রভাবিত করতে পারে। এছাড়া, আশ্চর্যের বিষয় হলো, এখন পর্যন্ত কেউ এই পর্বতের চূড়ায় আরোহন করতে পারেনি।
কৈলাস মানস সরোবর যাত্রা: কিভাবে যাবেন?
যেহেতু কৈলাস পর্বত তিব্বতে অবস্থিত, তাই এই যাত্রা সহজ নয়। ভারত, নেপাল ও চীনের মধ্য দিয়ে বিভিন্ন পথ রয়েছে, যা দিয়ে কৈলাস মানস সরোবর যাত্রা করা যায়।
১. ভারত থেকে:
- ভারত সরকার পরিচালিত কৈলাস মানস সরোবর যাত্রার জন্য দিল্লি থেকে অনুমোদিত দল পাঠানো হয়।
- সাধারণত উত্তরাখণ্ডের লিপুলেখ পাস এবং সিকিমের নাথু লা পাস দিয়ে যাত্রা করা হয়।
২. নেপাল থেকে:
- কাঠমান্ডু থেকে লাসা হয়ে তিব্বতে প্রবেশ করা যায়।
- হেলিকপ্টার এবং ল্যান্ড রুট দুটো পথেই যাত্রা করা সম্ভব।
৩. চীন থেকে:
- যারা চীন থেকে কৈলাস পর্বত দর্শনে যেতে চান, তাদের জন্য লাসা থেকে সরাসরি যাতায়াতের ব্যবস্থা রয়েছে।
কৈলাস পর্বত পরিক্রমা তীর্থযাত্রীরা সাধারণত কৈলাস পর্বতের ৫২ কিলোমিটার পরিক্রমা করে। হিন্দু ও বৌদ্ধরা এটি পায়ে হেঁটে সম্পন্ন করেন, যেখানে কিছু জৈন ও বন ধর্মাবলম্বীরা কপাল ঠেকিয়ে ধীরে ধীরে যাত্রা করেন।
শেষ কথা কৈলাস পর্বত শুধু একটি পাহাড় নয়, এটি এক আধ্যাত্মিক অনুভূতি ও বিশাল ঐশ্বরিক শক্তির প্রতীক। এটি ধর্মীয়, ঐতিহাসিক এবং বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকে এক অত্যাশ্চর্য পর্বত, যা বহু বছর ধরে মানুষের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে আছে।
- Malaysia PM: $10 Billion Committed to National Grid Upgrade
- মালয়েশিয়া PM ১০ বিলিয়ন ডলার গ্রিড আপগ্রেডে কাজে বিনিয়োগ ঘোষণা
- এনার্জি সেভিং LED লাইট ব্যবহারের ৭টি সুবিধা – বিদ্যুৎ বিল কমানোর উপায়
- তাইওয়ান হুয়াওয়ে ও এসএমআইসি-কে রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ তালিকায় যুক্ত করল
- Taiwan adds Huawei & SMIC to Export Control List